The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪

ভিক্ষা না করে গামছা বেচি, আল্লাহর রহমতে ভালো আছি

বয়সের ভারে ভালো করে হাঁটতেও পারেন না। তবুও জীবনের তাগিদে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফেরি করে সেই গামছা বিক্রি করেন তিনি। নাম মোকাদ্দেস আলী, বয়স ৮০ বছর। শহরের মানুষ তাকে গামছার ফেরিওয়ালা হিসেবেই চেনেন।

জীবিকার তাগিদে নিজেই তাঁতকলে তৈরি করেন গামছা। বর্তমান ঘুনে ধরা সমাজে অন্যদের তুলনায় মোকাদ্দেস আলীর আত্মবিশ্বাস এবং মনোবল অনেক বেশি সেটা বলাই চলে। কারণ বয়সের ভারে চলতে না পারা, চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়াকে পুঁজি করে ভিক্ষা করতে পারেন কিন্তু তিনি তা না করে গামছা বিক্রি করে সংসার চালান।

বৃদ্ধ মোকাদ্দেস ৫ ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের বাবা । ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হয়েছে, তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে পৃথকভাবে বসবাস করেন। ছেলেরা সবাই দিনমজুর। বৃদ্ধ মোকাদ্দেস তার ৭৭ বছর বয়সী অসুস্থ স্ত্রী রুবিয়া খাতুনকে নিয়ে আলাদাভাবে বসবাস করেন। গামছা তৈরির কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী। রুবিয়া হার্টের অসুখসহ বিভিন্ন রো’গে আ’ক্রান্ত।

আত্মবিশ্বাসী এই বৃদ্ধ মোকাদ্দেসের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত হেঁটে গামছা বিক্রি করে আসছেন মোকাদ্দেস। তার আগে ছোটবেলা থেকে প্রায় ৪০ বছর পায়ে প্যাডেলের ভ্যান চালিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বয়স বেড়েছে, শরীরের শক্তি হারিয়েছে, চোখে আর আগের মতো দেখি না। তবুও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি, বড় ধরনের কোনো রোগ নেই।

তিনি বলেন, প্রতিদিন চার থেকে ছয়টি গামছা তৈরি করি ও সেগুলো বিক্রি করি। প্রতিটি গামছা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। এতে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা লাভ হয়। আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।

বৃদ্ধ বয়সে গামছা তৈরি করতে কষ্ট হয়। বিক্রি করতেও কষ্ট হয়। কিন্তু জীবন জীবিকার তাগিদে এই কাজ করি। আমাকে দেখে বহু মানুষ সালাম দেয়। আমার সাথে সবাই গল্প করে। মানুষ আমাকে খুব ভালোবাসে।

পথেঘাটে দেখি, আমার চেয়ে অনেক কম বয়সী শক্তিশালী মানুষ ভিক্ষা করে। জোয়ান-জোয়ান মানুষ ভিক্ষা করে, আমি ভিক্ষা করি না। কখনো কারো কাছে হাত পাতি না। আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।

 

 

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.