আজ থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া। প্রায় সাড়ে চার লাখ আসনে ভর্তির জন্য এ আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। তবে গত বছরের মতো এবারও বিপুল সংখ্যক আসন ফাঁকা থাকার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তির যোগ্যতা শিথিল না করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মোট আসন ছিল চার লাখ ৩৬ হাজার। এর মধ্যে প্রথমবর্ষে ভর্তি হয় তিন লাখ ৯৭ হাজার শিক্ষার্থী। প্রথম বর্ষে ফাঁকা ছিল প্রায় ৩৯ হাজার আসন। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য আবেদনের যোগ্যতায় বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসনে ভর্তির জন্য এসএসসি ও এইচএসসিতে চাওয়া হয়েছে ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫।
এ ছাড়া মানবিকে এসএসসিতে ৩.৫ ও এইচএসসিতে ৩.০ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এ যোগ্যতা পূরণ না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনই করতে পারবেন না। আগে আবেদনের জন্য যোগ্যতা ছিল এসএসসি এবং এইচএসসি মিলিয়ে ২.৫ করে সর্বনিম্ন জিপিএ ৫। ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞানে ছিল সর্বনিম্ন ৩.০০ করে।
এবার ভর্তিচ্ছু তাহসেন বেন আলম নামে এক শিক্ষার্থী এইচএসসিতে ৪.৬৭ পেলেও এসএসসিতে পেয়েছেন ৩.৪৪। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকেও কি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বড় হয়ে গেছে: রেহানা আক্তার এসএসসিতে ৩.৪০ পেয়েছেন। তিনি বলেন, আবেদনই যদি করতে না পারি, তাহলে শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটবে। শিক্ষার্থীরা সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে ভর্তি করানোর দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান বলেন, অনার্সে সরকারি কলেজের মতো বেসরকারিতে সিট দিলে শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। এ কারণে সিট ফাঁকা থাকে। এ ছাড়া অনেক সময় শিক্ষার্থী চলে যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন আসে। এ কারণে যোগ্যতা সামান্য বাড়িয়েছি। তাদের শিক্ষাজীবনও শেষ হয়ে যাচ্ছে না। চাইলে ডিগ্রি কিংবা প্রফেশনাল কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন তারা।
জানা গেছে, করোনার কারণে ২০২১ সালে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছর প্রকাশিত ফলাফলে এক লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন জিপিএ-৫ পান। সার্বিক পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে পাস করে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন শিক্ষার্থী।
সব বিভাগ ও বোর্ড মিলিয়ে ৩.৫ থেকে ৩.০০ পেয়েছেন প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থী। আর ৩.০০ এর কম পেয়েছেন ৫ লাখের বেশি। সেইসঙ্গে ৩.০০ থেকে ৩.৫০ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বড় একটি অংশ অযোগ্য হবে। সব মিলিয়ে কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের সুযোগই থাকবে না।