The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ২রা জুলাই, ২০২৪

বৌ বাচ্চা নিয়ে খাবো কি! কিস্তির টাকা পরিশোধ না হতেই চুরি হয়ে গেলো অটোভ্যান

বেরোবি প্রতিনিধিঃ এখন আমি কি করবো? কি করে কিস্তির টাকা পরিশোধ করবো..? বৌ বাচ্চা নিয়ে খাবো কি। আমার তো শেষ সম্বলটুকুও শেষ হয়ে গেলো। এইভাবে বিলোপ করে   বলতেছিলেন অটোভ্যান চালক  হেলাল (২৬)।

উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন অটোভ্যানটি চুরি হওয়ায় ঘোরেনি ভ্যানের চাকা আর সেই সঙ্গে আর ঘুরছে না জীবনের চাকাও। ভ্যান হারিয়ে পাগল প্রায় হয়ে পড়েছেন চালক মো. হেলাল হোসেন (২৬)। তার বাড়ি খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ান গড়  গ্রামের বাসিন্দা অটোভ্যান চালক মিজানুর রহমানের ছেলে হেলাল হোসেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনের সংসার চলে ভ্যানের চাকায়। এখন কোথায় যাবেন, কী করবেন, কী খাবেন—এই ভেবে তাঁর কাটছে দিনরাত।

রবিবার (৩০ জুন)  দুপুরে তার বাড়ি গিয়ে  দেখা যায়, জরাজীর্ন একটি টিনশেড ঘরের বিছানায় বসে আছেন হেলাল ও তাঁর স্ত্রী লাকী । তাঁদের চোখেমুখে হতাশার ছাপ। পাশেই পড়ে আছে ভ্যানের চার্জার। এনজিও থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে অটোভ্যানটি কিনেছিলেন হেলাল হোসেন।

জানা যায়, গত ২৯ জুন (শুক্রবার) রাতে প্রতিদিনের ন্যায় বাড়ির বারান্দায় শিকল ও তালা লাগিয়ে অটোভ্যান চার্জ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে উঠে ভ্যান না পেয়ে চিৎকার দিতে থাকে। পরে স্থানীয় লোকজন আসে।

ভুক্তভোগী হেলাল হোসেন বলেন, আমি দুই মাস আগে আশা সমিতির টাকায় এই ভ্যানগাড়ী কিনে স্ত্রী আর ২ ছেলেকে নিয়ে দু’বেলা দু’মুটো ডাল ভাত খেয়ে কিস্তি চালিয়ে যাচ্ছিলাম। সব শেষ করে দিলো চোরের দল।

এখন আমি কি করবো? কি করে কিস্তির টাকা পরিশোধ করবো..? বৌ বাচ্চা নিয়ে খাবো কি। আমার তো শেষ সম্বলটুকুও শেষ হয়ে গেলো। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে একটা অনুরোধ আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন।

স্থানীয়রা জানায়, হেলাল হোসেন একজন দরিদ্র দিনমজুর। সংসারের জীবিকা নির্বাহের জন্য দুই মাস আগে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে অটোভ্যানটি কিনেছিলেন। ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়ে ৪ জনের সংসার চালিয়ে ঋণের কিস্তির টাকা দেন। একমাত্র অটোভ্যানই তার সম্বল। কিন্তু অটোভ্যানটি চুরি হওয়ায় তার শেষ সম্বল আর নাই। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েছে।

এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে হেলালের স্ত্রী লাকী বলেন, ‘ওই অটোভ্যানই ছিল আমাদের সব। ভ্যান চালিয়েই প্রতিদিন চাল-ডাল কিনত। এখন সেই ভ্যান নাই.. খাব কী? আর লোন (ঋণ) দেব কী করে…।’

ইউপি সদস্য তমিজ উদ্দিন বলেন, অটোভ্যান চালক হেলাল অতি দরিদ্র। তার উপর পরিবারের সদস্যরা নির্ভর করে। তার ভ্যান চুরি হওয়ায় সে নি:স্ব হয়ে পড়লো।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.