নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলনে বক্তব্য দিতে আসলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়াকে কে ভুয়া বললেন কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর ১২ টা থেকে রংপুরের মর্ডান মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বেলা সোয়া ১ টার দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাঝে বক্তব্য দিতে আসেন বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া। তিনি কথা বলা শুরু করলে শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া বলে শ্লোগান দিতে থাকে।
পোমেল বড়ুয়া বলেন, আপনারা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন এতে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।…….. এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চারপাশ থেকে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ শ্লোগান দেন। পরে তিনি সেখান থেকে চলে যান।
দুপুর পৌনে ২ টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলে। এরপর দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা।
এরআগে দুপুর ১২ টায় রংপুরের মর্ডান মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। দেড় ঘন্টা অবরোধ শেষে দুপুর পৌনে ২ টায় অবরোধ তুলে নেয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, এই বৈষম্যমূলক কোটা প্রথা মানি না। কোটার কারণে মেধাবীরা সঠিক মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ৮০ পেয়েও চাকরি পাবে না, আর কোটাধারীরা সহজেই চাকরি পাবে, এই বৈষম্য সংবিধান পরিপন্থি।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে পর্যন্ত কোটা ঠিক ছিল। নাতি-নাতনি বিষয়টা অযৌক্তিক। এক শতাংশ প্রতিবন্ধী বাদে সব কোটা বাতিল করতে হবে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করেছিলেন কিছু সময়ের জন্য। পরে তারা আবার রাস্তা ছেড়ে চলে গেছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ-
**২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে;
** ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে;
** সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে;
** দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।