The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বেরোবিতে সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ

বেরোবি প্রতিনিধি: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবি করে ভিন্ন ধরনের অপরাজনীতির ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) রাত ৪ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা না করে, সমন্বয়কদের না জানিয়ে, দুই জন সাধারণ শিক্ষার্থীসহ একজন বেরোবির সমন্বয়ক দাবি করে প্রভাব খাটিয়ে শহীদ মুখতার ইলাহী হলের গেটে তালা দিয়েছে শাহারিয়ার সোহাগ। সকালে উঠে শিক্ষার্থীরা বাইরে না বেড়াতে পেরে চিল্লাচিল্লি শুরু করে। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তালা খুলে দেন।

অপর আরেক সমন্বয়ক দাবি করা শিক্ষার্থী হাবিবুর আহসান আবাসিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৬০৫ রুম থেকে একাধিক দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করে হল প্রশাসন।

গত কাল বুধবার (১৪ই) রাত ৯ টায় ছেলেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক ও আনসারদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। তখন বিভিন্ন রুমে তল্লাশি শুরু করে এক পর্যায়ে ৬০৫ রুমে তল্লাশি করতে চাইলে বিভিন্নভাবে বাঁধা দেয়। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাধা উপেক্ষা করে তল্লাশি অভিযান চালায়। সময় বিপুল লোহার পাইপ, রড, রাম দা, হকিস্টিক, চাকু, মদের বোতল ও গাঁজা খাওয়ার সামগ্রীসহ দেশীয় অস্ত্র ও বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ৫ আগষ্ট পর থেকে বিভিন্ন ভাবে নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করেছে কিছু রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা এবং ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর রহমত আলীসহ অনেকে রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়।

এই নামধারী সমন্বয়কের সহযোগিতায় ছাত্রলীগের নেতারা তাদের আবাসিক হলের রুমে থেকে বিভিন্ন অগ্নি অস্ত্রসহ জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার সাহায্য করেছেন বলে অভিযোগ করেছে একাধিক শিক্ষার্থী। আরো জানা যায়, ছাত্রলীগের যারা নিয়মিত কর্মী যারা পোস্টেড নয় তাদের হলে রাখার জন্য প্রভোস্ট দপ্তরে বার বার সুপারিশ করেন সমন্বয়করা। এমনকি তাদের সুপারিশ ছাড়া অন্য কাউকে হলে কাউকে সিট না দেয়ার জন্য প্রভোস্ট বডিকে বলে রেখেছে।

এদিকে বিভিন্ন দিক থেকে চাপ আসায় আজ ১৫ আগস্ট দুপুরে শহীদ মুখতার ইলাহি হলের প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টরা পদত্যাগ করেছেন। এর আগে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্টও পদত্যাগ করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা দাবি করে সমন্বয়ের প্যানেলে যারা দায়িত্ব পালন করছেন অধিকাংশ সমন্বয়ক কোঠা সংস্কার আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিল না। দ্বিতীয়বার যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, স্বৈরাচার মুক্ত করা হয় এর পর থেকেই তাদের বিভিন্ন ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে দেখা যায়।

শহীদ মুখতার ইলাহী হলের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের হল স্বভাবিক ভাবে চলতেছিলো, এমনি হলে তাদের সিনিয়র সমন্বয়কও আছে, তাছাড়া যারা সাধারণ শিক্ষার্থী আছে তারা সবাই মিলে হলের নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। হঠাৎ সে রাত ৪ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা না করে, তার অন্য সমন্বয়কদের না জানিয়ে, দুয়েকজন মিলে নিজের প্রভাব খাটিয়ে হলে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তারপর সাধারণ শিক্ষার্থীরা কারণ জানতে চাইলে সঠিক কারণ দেখাতে না পারায় মাফ চেয়ে হল ত্যাগ করে।

এই সমন্বয়দের উল্লেখ করে শিক্ষার্থী রাসেল মিয়া বলেন, “আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে সাহায্য করার জন্য নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করছে। তাদের সহায়তায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনে সহয়তায় হল থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা তাদের ব্যাক্তিগত জিনিসপত্র ও অগ্নি অস্ত্র নিয়ে চলে গেছে। তাদের এই অপর রাজনীতি ধূলিস্যাৎ করতে হবে।”

অন্য এক শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন ফেসবুকে লিখেন, যারা সত্যিকারের সমন্বয়ক তারা কখনো এখন নিজেদের সমন্বয়ক বলে ঢোল পিটাবে না, এখন যারা নিজেদের সমন্বয়ক বলে বিফিং করছে তারা আবার নতুন করে নিজেদের সার্থ হাসিলের জন্য করছে,। এরা নতুন করে আবার বৈষম্য তৈরির জন্য এইসব করছে।

জাকির জীবন বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ছায়াতলে থেকে সুবিধা নেয়া ব্যক্তিরা আবার সমন্বয়ক সাজতে চেষ্টা করতেছে। তাই সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য অনুরোধ করছি।

রেজিস্ট্রার প্রকোশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, শহীদ মুখতার ইলাহী হলের তালা দেওয়ার বিষয়ে কোনো অনুমতি ছিল না।

উল্লেখ, শিক্ষার্থীরা কোন দাবি নিয়ে আন্দোলন করতে চাইলে তাদের অসহযোগিতা করা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমন্বয়কদের মধ্যে দ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলছেন শিক্ষার্থীরা।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.