The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

বৃষ্টিতেও দমেনি ইবির কোটাবিরোধী আন্দোলন, মহাসড়ক অবরোধ

ইবি প্রতিনিধি: সরকারি চাকরি, সায়ত্ত্বশাসিত বা আধা-সায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতিদের ৩০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল করে দেওয়া উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে কোটা বাতিল করে মেধা ভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে ৩য় দিনের মতো আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় কোটা বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয় কয়েকশতাধিক শিক্ষার্থী। বেলা সাড়ে ১১ টায় শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজার পর্যন্ত পদযাত্রা পালন করেন। এসময় তারা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে পৌনে ১২ টার দিকে প্রধান ফটক সংলগ্ন মহাসড়কে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় জরূরী রোগী সেবা দেয়া যানবাহগুলোকে ছেড়ে দেয়া হলেও বন্ধ রাখা হয় অন্যান্য যানবাহন। প্রায় ৪৫ মিনিটের অবস্থান শেষে আজকের মতো কর্মসূচী সমাপ্ত করেন শিক্ষার্থীরা।

পদযাত্রা ও অবস্থান কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার। জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে। লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে। আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনে অংশ নেয়া আইন বিভাগের নারী শিক্ষার্থী শাওয়ানা শামীম বলেন, আমি একজন নারী হয়ে চাকরীতে নারী কোটার বিরুদ্ধে কথা বলছি। চাকরীতে কোনো প্রয়োজন নেই নারী কোটার। নিজের যোগ্যতায় স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়েছি চাকরীও নিজের যোগ্যতায় পাবো। আমি যেখানে অগ্রসর কোটা সেখানে কি প্রয়োজন। এটা সংবিধান বিরোধী।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আইরিন সুলতানা বলেন, আমরা নারী হয়েও আমরা নারী হয়েও নারী কোটা চাচ্ছি না। তাহলে সেই ৫৩ বছর আগের মুক্তিযুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতী-নাতনীরা কেনো কোটার সুবিধা ভোগ করবে? আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করছি না। তাদের অবদান দেশের মানুষ আজীবন মনে রাখবে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে এই ৩০% কোটা বৈষম্য সৃষ্টি করে। আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান আমরা কখনো অস্বীকার করছি না। তবে কোটার ব্যবহারের ফলে একটা গোষ্ঠী শিক্ষা চাকরি এবং সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এরফলে আমরা যে সাধারণ শিক্ষার্থী আছি তারা পিছিয়ে যাচ্ছি। এটা এক প্রকার বৈষম্য। যা আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমাদের কোটার একটি সুষ্ঠু বণ্টন থাকা উচিত। আমাদের দাবি হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র যেনো পুনর্বহাল রাখা হয়।

কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ছাত্র ইউনিয়ন ইবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম সুইট বলেন, আমাদের এই বৈষম্যবিরোধী সংগ্রাম একদিনের নয়। এই সংগ্রাম ১৯৫২ সাল থেকেই চলমান রয়েছে। আমার মনে হয় না মুক্তিযোদ্ধারা এই কোটা বৈষম্য টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাঁরা দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্যই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আমরা কোটা বাতিলের পক্ষে না আমরা কোটা সংস্কারের পক্ষে। বাংলাদেশে ছাত্র সমাজ, গুণীজন, বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদদের সাথে সমন্বয় করে একটি সুষ্ঠু সমাধান বের করবেন। এই প্রত্যাশায় আমাদের এই লড়াই সংগ্রাম।

এর আগে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের দুইজন শিক্ষক কোটাবিরোধী আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.