ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে চালু হয়েছে বুটেক্স এনভায়রনমেন্টাল ক্লাব। গত ২০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) মো. সাজ্জাদ হোসাইন চৌধুরী হিমুকে সভাপতি ও মো. তানহা উদ্দিন খান আদিবকে সাধারণ সম্পাদক করে কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের নাম প্রকাশ করে ক্লাবটি।
‘Sustain the Earth, Secure the Future’ স্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে এই ক্লাব। মূলত টেক্সটাইলের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক, টেক্সটাইলের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সতর্কীকরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি, বস্ত্রপ্রকৌশলের বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম যেমন- গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি, সাস্টেনিবিলিটি, ইকো-ফ্রেন্ডলি প্রোডাকশন, সার্কুলার ইকোনোমি ও প্রোডাকশন, রিসাইকেলিং, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত করতে ও টেক্সটাইল সেক্টরে এসব অনুশীলন শুরু করতে কাজ করে যাবে নবগঠিত এই ক্লাব।
ক্লাব সম্পর্কে জানতে চাইলে নবনির্বাচিত সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসাইন চৌধুরী বলেন, এই ক্লাব টেক্সটাইল সেক্টরে সর্বদা একটি সাসটেইনেবল ভবিষ্যত নির্মাণের অঙ্গীকারে ভূমিকা পালন করে যাবে। যার জন্য এই ক্লাব ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়োপযোগী সেমিনার, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি আয়োজন করবে যা ভবিষ্যত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের এইসব নিয়ে জ্ঞান ও আগ্রহ সৃষ্টি করবে। এই ক্লাব শুধু একটি নির্দিষ্ট বিভাগের জন্য নয় বরং সকল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের পরিবেশ ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সম্পর্ক জানাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
এই ক্লাবের সামগ্রিক ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. তানহা উদ্দিন খান আদিব বলেন, বুটেক্স এনভায়রনমেন্টাল ক্লাব ২০২০ সালে ‘Today’s illusion, tomorrow’s Vision’ নীতিবাক্য ধারণ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ছিল একটি স্বপ্নের শুরু। ২০২৫ সালে আমরা নতুন উদ্যমে এবং একটি নতুন মটো নিয়ে আমাদের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি।
এই নতুন মটো আমাদের ক্লাবের লক্ষ্য এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা শুধু বর্তমান পরিবেশ নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটি সুরক্ষিত ও টেকসই পৃথিবী তৈরি করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আমাদের ক্লাবের প্রধান লক্ষ্য হলো পরিবেশ ও টেক্সটাইল শিল্পের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং এই শিল্প থেকে উদ্ভূত ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে টেকসই সমাধানের প্রচার করা। আমরা পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ, যেমন- গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি, সাসটেইনেবিলিটি, রিসাইকেলিং, এবং সার্কুলার ইকোনমি নিয়ে কাজ করছি।
২০২৫ সাল থেকে আমাদের ক্লাবের অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে, যা আমাদের লক্ষ্য পূরণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আমরা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কশপ, এবং প্রজেক্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে টেকসই ভবিষ্যতের ধারণা জাগ্রত করতে চাই।
গবেষণা ভিত্তিক কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্লাবের মডারেটর ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. মোরশেদুল হক জানান, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণতা পায় গবেষণাধর্মী কাজ করার মাধ্যমে। বর্তমানে আমাদের দেশে ৬০ ভাগ দুষণ হয় টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি থেকে। আর আমাদের এই ক্লাব সর্বদা টেক্সটাইলের ক্ষতিকর উপাদান থেকে পরিবেশকে সুরক্ষার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে গবেষণামূলক কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করবে। মূলত পরিবেশ সুরক্ষিত রেখে এবং অন্যান্যদিক সমন্বয় করে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিকে কীভাবে সাস্টেইনেবল করা যায় এটাই থাকবে এই ক্লাবের মুখ্য উদ্দেশ্য।
ক্লাবের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ক্লাবের গঠনতন্ত্র রেজিস্ট্রার অফিসে পাঠানো হয়েছে এবং খুব দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, ক্লাব নিয়ে শিক্ষার্থীরা আশা করছেন গতবারের মত এইবার নতুনভাবে চালু হওয়া এই ক্লাব অদূর ভবিষ্যতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে না। ক্লাবের নেতৃবৃন্দ তাদের উদ্যোগে সবার সমর্থন চেয়েছেন যাতে সকলে একসাথে কাজ করে টেক্সটাইল শিল্পকে পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই করে তোলা যায়।