বুটেক্স প্রতিনিধি: বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) সনাতনী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হয় শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা-১৪৩১। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় সারি সারি প্রদীপ প্রজ্বলন ও দেবী শ্যামার অর্চনা করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব এই পূজা।
উক্ত অনুষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত সনাতনী শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করে। দিনভর উপবাসের পর রাতে অনুষ্ঠিত শ্যামা মায়ের পূজায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা।
শুরুতে সনাতনী শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যায় দীপাবলি উদযাপন করে। এরপর রাত ১১:০০ ঘটিকা থেকে মাতৃবরণ, অধিবাস ও মায়ের আরতি হয়। অতঃপর রাত ১২:০০ ঘটিকায় মাতৃপূজা আরম্ভ হয় এবং ৪:০০ ঘটিকায় অঞ্জলি হয়। সবশেষে উপস্থিত সকলের মাঝে প্রসাদ বিতরণের মধ্যে শ্যামা পূজা সম্পন্ন হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীরা শ্যামা সঙ্গীতও পরিবেশন করে।
টেক্সটাইল ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুদিপ্ত বণিক জানান, বুটেক্সে প্রথমবারের মত শ্রী শ্রী শ্যামা পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট থাকতে পেরে আমি খুব গর্বিত ও আনন্দিত মনে করছি। শ্যামা মা শক্তির দেবী এবং তিনি পৃথিবী থেকে সকল অশুভ শক্তির বিনাশ করুক এটাই চাই। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিয়ে চাই আমাদের এই আয়োজনে সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য। তার সাথে এটাও আশা রাখি সামনের দিনগুলোতে বা অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুষ্ঠান করার জন্য আমরা প্রধাদিন থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবো। আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এত সুন্দর আয়োজন করার জন্য।
ডাইস এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সন্তু দাস বলেন, এই প্রথমবারের মতো ক্যাম্পাসে শ্যামা পূজা দেখায় আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত। কারণ এর আগে আমরা ক্যাম্পাসে শ্যামা পূজা দেখি নি। আগে আমাদের পূজা উদযাপন করতে অন্যান্য ক্যাম্পাসে, রমনা মন্দির সহ বাইরে কোথাও যেতে হতো। আমরা এখন সবাই ভালোভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবো ও মায়ের কাছে সবার জন্য মঙ্গল কামনা করতে পারবো।
উল্লেখ্য, বাংলা কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে শ্যামাপূজা বা কালীপূজা উদযাপিত হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই দিনে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। এটিকে বলা হয় দিপাবলী বা দেওয়ালি। ধর্মীয় বিশ্বাস মতে দুষ্টের দমন আর শিষ্টের লালনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ভক্তের জীবনে অবারিত কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে ধরাপৃষ্ঠে আগমন ঘটে দেবী শ্যামার। এই দিনে জননীরূপে বাঙালীর জীবনে আবির্ভাব ঘটবে মহাশক্তি ত্রিনয়নী মা শ্যামার।