জুলাই মাসে বিশ্বে খাদ্যের দাম অনেক কমে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। ইউক্রেনের বন্দর থেকে রাশিয়া অবরোধ তুলে নেওয়ার পর খাদ্যশস্যের চালান শুরু হওয়ায় দাম কমেছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক এই সংস্থা। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর মার্চ মাসে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। কারণ ‘পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি’ হিসেবে পরিচিত ইউক্রেনের সমুদ্রবন্দর অবরোধ করে রেখেছিল রুশ বাহিনী। ফলে কোনো শস্যবাহী জাহাজ ইউক্রেন ছেড়ে যেতে পারছিল না। তখন বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট দেখা দেয় এবং বেড়ে যায় খাদ্যের দাম। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে বলেছিল, বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
পরে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শস্যচুক্তি হলে গত সোমবার থেকে ইউক্রেনের বন্দর থেকে শস্যবাহী জাহাজ ছাড়তে শুরু করে। এরই প্রভাব পড়েছে খাদ্যের বিশ্ববাজারে এবং দাম কমেছে।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থার খাদ্য মূল্যসূচক অনুসারে, জুনের তুলনায় জুলাই মাসে খাদ্যের দাম ৮ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে উদ্ভিজ্জ তেলের। গত জুনের তুলনায় জুলাইয়ে উদ্ভিজ্জ তেলের দাম কমেছে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। অন্যান্য দানাদার খাদ্যের মূল্যসূচকও গত এক মাসে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।
এফএও জানিয়েছে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শস্যচুক্তি হওয়ার ফলে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো অবরোধমুক্ত হয়েছে। এর ফলে বিশ্ববাজারে গমের দরপতন হয়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো টোরেরো খাদ্যপণের দরপতনকে স্বাগত জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘খাদ্যের দাম অতি উচ্চ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে দরপতন হয়েছে এবং ব্যাপারটিকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ খাদ্য গ্রহণের অধিকার সবার রয়েছে।’
তবে সারের দাম এখনো বেশি থাকায় অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাক্সিমো টোরেরো।