ফজলে রাব্বী পরশ, রাবি: বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিভিন্ন বিভাগের ২৯৪ জন গবেষকের নাম এসেছে। এ বছর দেশের ২১৮টি সরকারি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৬ হাজার ৭৫৬ জন গবেষক স্থান পেয়েছেন।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সংস্থা অ্যালপার ডগার (এডি) সায়েন্টিফিক ইনডেক্সের ২০২৫ সালের বিশ্বসেরা গবেষকদের নিয়ে প্রকাশিত একটি তালিকা থেকে এ তথ্য জানা যায়। র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ২২০টি দেশের ২৪,৩৬১টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৭টি সাবজেক্টের ওপর ২৪ লাখ ১৫৫ জন গবেষক ও বিজ্ঞানী স্থান পেয়েছে।
র্যাঙ্কিং তালিকার ‘এইচ’ ইনডেক্স সূত্রে, দেশীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে গত বছর থেকে এ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান উন্নতি হয়েছে। এ বছর বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৪র্থ যা গত বছরে ছিল ৭তম এবং ২০২৩ সালে ছিল ১০ম। বিশ্বে ২ হাজর ২৯৪তম যা গত বছরে ছিল ৩ হাজার ৯১২তম এবং ২০২৩ সালে ছিল ৪ হাজার ২৯৮তম। অর্থাৎ ক্রমাগতভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান উন্নতি হয়েছে।
গত কয়েক বছরের ন্যায় এ বছরের তালিকায়ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছেন ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলি আকবার। তিনি প্রকৃতি বিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণা করে বর্তমানে রাবির সর্বোচ্চ র্যাঙ্কে অবস্থান করছেন। তাঁর সাইটেশন সংখ্যা ৮ হাজার ৩৭৩।
তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিংয়ে সেরা ১০ জনের অন্যান্য গবেষকরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ), অধ্যাপক এম. ইয়ামিন হোসাইন (ফিসারিজ বিভাগ), অবসারপ্রাপ্ত অধ্যাপক এ.কে.এম. আজহারুল ইসলাম (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ), অধ্যাপক ড. এম. আশিক মোসাদ্দিক (ফার্মেসি বিভাগ), অধ্যাপক এ.এইচ.এম. মাহবুবুর রহমান (বোটানি বিভাগ), অধ্যাপক আবু ড. মো. খালেদ হোসাইন (বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগ), অধ্যাপক মির্জা হুমায়ুন কবির রুবেল (ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), অধ্যাপক জাকের হোসাইন (ইইই বিভাগ), সহযোগী অধ্যাপক ড. আহমাদ হুমায়ুন কবীর (বোটানি বিভাগ)।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, আমি মনে করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। এগুলো দেখতে তো ভালোই লাগে। আমাদের আরো অনেক ভালো করতে হবে এবং সেই সুযোগ আমাদের আছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক গবেষকের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে এইসব গবেষকের অনেক অবদান আছে। খুব শীঘ্রই গবেষকদের নিয়ে আমরা বসব এবং কীভাবে আরো ভালো করে যায় তার জন্য পরিকল্পনা করব।
সংস্থার ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, ইনডেক্সটি (AD Scientific Index) সারাবিশ্বে গবেষণাপত্রের কার্যকরিতা মূল্যায়নের মাধ্যমে ‘এইচ’ এবং ‘আই-১০’ সূচকে এ তালিকা তৈরি করে। এ পদ্ধতির উদ্ভাবক দুই গবেষকের (অধ্যাপক মুরত আলপার এবং চিহান ডজার) দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী-গবেষক-অধ্যাপকদের কাজ এবং তাদের শেষ ৬ বছরের কাজের তথ্য বিশ্লেষণের পর তা এইচ-ইনডেক্স, আইটেন-ইনডেক্স স্কোর এবং সাইটেশনের ওপর ভিত্তি করে এ তালিকা প্রকাশিত হয়। এতে নিজ নিজ গবেষণার বিষয় অনুযায়ী গবেষকদের বিশ্ববিদ্যালয়, নিজ দেশ, মহাদেশীয় অঞ্চল ও বিশ্বে নিজেদের অবস্থান জানা যায়।
তাছাড়া সূচকটিতে গবেষকদের বিশ্লেষণ ও বিষয়গুলো নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে গণ্য করা হয়। কৃষি ও বনায়ন, কলা নকশা ও স্থাপত্য, ব্যবসায় ও ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, শিক্ষা, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ইতিহাস দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব, আইন, চিকিৎসা, প্রকৃতিবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞানসহ মোট ১২টি ক্যাটাগরিতে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।