সাকিবুল ইসলাম, জবি প্রতিনিধি: বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় এবার স্থান পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ৯৫ জন শিক্ষক ও গবেষক। ২০২২ সালেও ৯৫ জন শিক্ষক ও গবেষক এই তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সংস্থা অ্যালপার ডজার (এডি) সায়েন্টিফিক ইনডেক্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড সায়েন্টিস্ট র্যাংকিং-২০২৩’-এ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫ জন গবেষকের নাম উঠে এসেছে।
এডি সায়েন্টেফিক ইনডেক্স প্রকাশিত তালিকায় জবির গবেষকদের মধ্যে প্রথম ও বাংলাদেশের মধ্যে ৩৪ তম স্থানে রয়েছেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আলম খান। তিনি বর্তমানে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও ১৫৩ তম স্থানে রয়েছেন এজে সালেহ আহাম্মদ, ১৯৪তম স্থানে মোহাম্মদ শরিফুল আলম, ৩৪৪ তম স্থানে মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, ৩৫৪ তম স্থানে মোহাম্মদ সাঈদ আলমসহ আরও ৯০ জন গবেষক।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের র্যাংকিংয়েই জবির গবেষকদের সংখ্যা বাড়ছে। এটি আমাদের জন্য যেমন অনুপ্রেরণার তেমনই গর্বের। আমাদের আরও শিক্ষক রয়েছেন যারা এই তালিকায় স্থান পাওয়ার যোগ্য। বিভিন্ন সমস্যার কারণে ওয়েবে গবেষণাপত্র সাবমিট না হওয়ায় তাদের নাম তালিকায় আসেনি। আমরা আশাবাদী, আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় আমাদের যেসব শিক্ষক ও গবেষক স্থান পেয়েছেন তাদের সবাইকেই অভিনন্দন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বৃদ্ধিতে অবদান রাখছেন। ইতোমধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছি। আগামীতে গবেষণায় আরও ভালো ফল আসবে এবং মান আরও উন্নত হবে বলে আশা করছি।’
২০২৩ সালে এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্সের প্রকাশিত তালিকায় বিশ্বের ২১৮টি দেশের ২১ হাজার ৯৭৬টি প্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ৫০ হাজার ৫৬২ জন গবেষক স্থান পেয়েছেন। তালিকায় বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি ১৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ হাজার ১৬৫ জন গবেষকের নাম এসেছে।
ওয়ার্ল্ড সায়েন্টিস্ট র্যাংকিংয়ের এ বছরের এই তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২৪ জন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ৫০০ জন গবেষক স্থান পেয়েছেন। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪০ জন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২২৫ জন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ২০০ জন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ জন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২১ জন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭২ জন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮৬ জন এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ১৭৪ জন গবেষক স্থান পেয়েছেন বিশ্বসেরা গবেষক ও বিজ্ঞানীর তালিকায়।
সংস্থার ওয়েবসাইট (adscientificindex.com) থেকে জানা যায়, ইনডেক্সটি সারাবিশ্বে গবেষণাপত্রের কার্যকরিতা মূল্যায়নের মাধ্যমে ‘এইচ’ এবং ‘আই-১০’ সূচকে এ তালিকা তৈরি করা হয়। এ পদ্ধতির উদ্ভাবক দুই গবেষক অধ্যাপক মুরত আলপার ও চিহান ডজার জানান, বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী-গবেষক-অধ্যাপকদের গবেষণা এবং তাদের শেষ ছয় বছরের কাজের তথ্য বিশ্লেষণের পর তা এইচ-ইনডেক্স, আইটেন-ইনডেক্স স্কোর এবং সাইটেশনের ওপর ভিত্তি করে এ তালিকা প্রকাশিত হয়। এতে নিজ নিজ গবেষণার বিষয় অনুযায়ী গবেষকদের বিশ্ববিদ্যালয়, নিজ দেশ, মহাদেশীয় অঞ্চল ও বিশ্বে নিজেদের অবস্থান জানা যায়।
সূচকটিতে গবেষকদের বিশ্লেষণ ও বিষয়গুলো নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে গণ্য করা হয়। কৃষি ও বনায়ন, কলা নকশা ও স্থাপত্য, ব্যবসায় ও ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, শিক্ষা, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ইতিহাস দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব, আইন, চিকিৎসা, প্রকৃতিবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞানসহ মোট ১২টি ক্যাটাগরিতে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।