The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে আসছে নীতিমালা, জাতীয় পে-স্কেলে বেতন-ভাতা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইচ্ছেমতো জনবল নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ আর থাকছে না। কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্ধারণ করা হচ্ছে যোগ্যতা। জাতীয় পে-স্কেল অনুযায়ী গ্রেড ও সুবিধা পাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এজন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ-পদোন্নতি অভিন্ন নীতিমালা-২০২২ প্রণয়ন করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। চলতি মাসেই সেটি চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

ইউজিসি থেকে জানা যায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ-পদোন্নতি কার্যক্রম বাস্তবায়নে একটি নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। এতে ইউজিসি চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক ও অন্য সব সদস্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। তারা এরই মধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছেন। দফায় দফায় সেটিতে পরিবর্তনও আনা হচ্ছে।

খসড়া নীতিমালায় দেখা গেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেক বিভাগের জন্য একজন কর্মকর্তা, দুজন অফিস সহায়ক ও কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেওয়া যাবে। তবে কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। এর বাইরে কোন পদের জন্য কী ধরনের যোগ্যতা প্রয়োজন হবে সেটিও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষকদের টিচিং লোড বা কর্মঘণ্টাও নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা থাকবে।

নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন কর্মকর্তা নবম গ্রেডে যোগদান করবেন। এরপর তিন থেকে চার বছর চাকরি অভিজ্ঞতা অর্জনের পর অষ্টম গ্রেডে, পরবর্তী তিন-চার বছর পর সপ্তম গ্রেডে যাবেন। এভাবে একজন কর্মকর্তা পঞ্চম গ্রেড পর্যন্ত যেতে পারবেন। এর ওপর আর পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন এর ব্যত্যয় ঘটে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ আন্দোলন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা আদায় করতে। এ বিষয়ে কোনো গাইডলাইন না থাকায় ভিন্ন ভিন্ন সুবিধা দেওয়া হয়। এতে এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ধরনের আর সরকারি অফিসে আরেক ধরনের সুবিধা দেওয়ায় তৈরি হয় জটিলতা।

তিনি বলেন, অষ্টম জাতীয় পে-স্কেল অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ-পদোন্নতিতে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। বিসিএসে যেসব যোগ্যতা প্রয়োজন হয় তারচেয়ে বেশি যোগ্যতা চাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে। এটি পরিবর্তন করে যোগদানের ক্ষেত্রে চার বছরের গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ইচ্ছেমতো তাদের সন্তান, আত্মীয় বা পছন্দের প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া কমবে। যোগ্যতা না থাকলে নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকছে না। আন্দোলন করে আর দাবি আদায়ের প্রয়োজন হবে না। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ-সুবিধা অভিন্ন থাকবে। কোথাও ভিন্ন রাখা যাবে না।

তারা জানান, ছয় মাস ধরে এ নীতিমালার কাজ শুরু করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের দাবি এক ধরনের, ইউজিসি সদ্যদের মত আরেক ধরনের। বড় ধরনের মতভেদ থাকায় এখন পর্যন্ত খসড়া চূড়ান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত সভায় নীতিমালাটি চূড়ান্ত করার কথা থাকলেও সেখানে বড় পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেটি সংশোধনের কাজ চলছে।

জানতে চাইলে ইউজিসির আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই পদে বিভিন্ন নামে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেটি ইউনিক পদে রূপান্তরে কাজ করা হচ্ছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পদমর্যাদা বিবেচনা করে অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলের আলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল নিয়োগ-পদোন্নতির অভিন্ন নীতিমালা করা হবে। এটি চূড়ান্ত করতে আরও কয়েকটি সভা প্রয়োজন। সেটি করে তা চূড়ান্তের পর এই নীতিমালা জারি করা হবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে আসছে নীতিমালা, জাতীয় পে-স্কেলে বেতন-ভাতা

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে আসছে নীতিমালা, জাতীয় পে-স্কেলে বেতন-ভাতা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইচ্ছেমতো জনবল নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ আর থাকছে না। কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্ধারণ করা হচ্ছে যোগ্যতা। জাতীয় পে-স্কেল অনুযায়ী গ্রেড ও সুবিধা পাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এজন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ-পদোন্নতি অভিন্ন নীতিমালা-২০২২ প্রণয়ন করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। চলতি মাসেই সেটি চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

ইউজিসি থেকে জানা যায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ-পদোন্নতি কার্যক্রম বাস্তবায়নে একটি নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। এতে ইউজিসি চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক ও অন্য সব সদস্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। তারা এরই মধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছেন। দফায় দফায় সেটিতে পরিবর্তনও আনা হচ্ছে।

খসড়া নীতিমালায় দেখা গেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেক বিভাগের জন্য একজন কর্মকর্তা, দুজন অফিস সহায়ক ও কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেওয়া যাবে। তবে কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। এর বাইরে কোন পদের জন্য কী ধরনের যোগ্যতা প্রয়োজন হবে সেটিও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষকদের টিচিং লোড বা কর্মঘণ্টাও নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা থাকবে।

নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন কর্মকর্তা নবম গ্রেডে যোগদান করবেন। এরপর তিন থেকে চার বছর চাকরি অভিজ্ঞতা অর্জনের পর অষ্টম গ্রেডে, পরবর্তী তিন-চার বছর পর সপ্তম গ্রেডে যাবেন। এভাবে একজন কর্মকর্তা পঞ্চম গ্রেড পর্যন্ত যেতে পারবেন। এর ওপর আর পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন এর ব্যত্যয় ঘটে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ আন্দোলন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা আদায় করতে। এ বিষয়ে কোনো গাইডলাইন না থাকায় ভিন্ন ভিন্ন সুবিধা দেওয়া হয়। এতে এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ধরনের আর সরকারি অফিসে আরেক ধরনের সুবিধা দেওয়ায় তৈরি হয় জটিলতা।

তিনি বলেন, অষ্টম জাতীয় পে-স্কেল অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ-পদোন্নতিতে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। বিসিএসে যেসব যোগ্যতা প্রয়োজন হয় তারচেয়ে বেশি যোগ্যতা চাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে। এটি পরিবর্তন করে যোগদানের ক্ষেত্রে চার বছরের গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ইচ্ছেমতো তাদের সন্তান, আত্মীয় বা পছন্দের প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া কমবে। যোগ্যতা না থাকলে নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকছে না। আন্দোলন করে আর দাবি আদায়ের প্রয়োজন হবে না। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ-সুবিধা অভিন্ন থাকবে। কোথাও ভিন্ন রাখা যাবে না।

তারা জানান, ছয় মাস ধরে এ নীতিমালার কাজ শুরু করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের দাবি এক ধরনের, ইউজিসি সদ্যদের মত আরেক ধরনের। বড় ধরনের মতভেদ থাকায় এখন পর্যন্ত খসড়া চূড়ান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত সভায় নীতিমালাটি চূড়ান্ত করার কথা থাকলেও সেখানে বড় পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেটি সংশোধনের কাজ চলছে।

জানতে চাইলে ইউজিসির আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই পদে বিভিন্ন নামে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেটি ইউনিক পদে রূপান্তরে কাজ করা হচ্ছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পদমর্যাদা বিবেচনা করে অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলের আলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল নিয়োগ-পদোন্নতির অভিন্ন নীতিমালা করা হবে। এটি চূড়ান্ত করতে আরও কয়েকটি সভা প্রয়োজন। সেটি করে তা চূড়ান্তের পর এই নীতিমালা জারি করা হবে।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন