বেকারত্বের হার কমিয়ে আনতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কারিগরি শিক্ষায় মনোনিবেশের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
গতকাল শুক্রবার মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার ভাটেরচর দেওয়ান এ মান্নান পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দীপু মনি বলেন, ‘যে দেশ কারিগরি শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষায় বেশি মনোযোগ দিয়েছে, সেই দেশ তত উন্নত-সমৃদ্ধ হয়েছে। জার্মানির মতো উন্নত দেশে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত। তাই কাজের জগতের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে তারা (উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান) কারিকুলাম ঠিক করুক।’
দীপু মনি আরও বলেন, ২০২৩ সাল থেকে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু করছে সরকার। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে সরকার কারিকুলাম পরিবর্তন করলেও উচ্চশিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন করতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের মাধ্যমে পরিচালিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে প্রায়োগিক শিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কারিকুলাম নিয়ে ভাবুক। তারা ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া লিংকেজ তৈরি করুক। কাজের জগতের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে কারিকুলাম ঠিক করুক। সেই কাজের জগতে ইন্টার্নি করার ব্যবস্থা করুক। তাতে শিক্ষার্থীরা কর্ম-উপযোগী হয়ে বের হবেন।’
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মডিউলার এডুকেশন ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘সবার আস্ত একটা বড় ডিগ্রি করার দরকার নেই। শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট করে নতুন নতুন দক্ষতা শিখে নেবেন। ছোট ছোট ডিপ্লোমা করবেন, কিছু সার্টিফিকেট কোর্স করবেন, বড় ডিপ্লোমা করবেন, যাঁর যেমন সুবিধা। শেখার জন্য সবাই কাজের জায়গা ছেড়ে আসতে পারবেন না। সে কারণে অনলাইন, অফলাইন মিলিয়ে ব্লেন্ডেড এডুকেশনে যুক্ত হবে। সেই ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে চাইছি।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা বড় প্রবণতা আছে, সব শিক্ষার্থী চান অনার্স-মাস্টার্স পড়তে। পৃথিবীর কোথাও শিক্ষার্থীরা এত অনার্স–মাস্টার্স পড়েন না। একটি পর্যায়ের পর অনেক শিক্ষার্থী বৃত্তিমূলক কারিগরি শিক্ষায় চলে যাবেন।’
জার্মানির মতো উন্নত দেশে ৫০ ভাগ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় পড়েন, এ কথা উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের সেই পথে হাঁটতে হবে। এ কারণে দেশের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে চেষ্টা করছি কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কর্ম-উপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করা যায়। যে শিক্ষার্থী অনার্স–মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে বের হন, তিনি যেন কাজের জগতের চাহিদা অনুযায়ী যোগ্যতা অর্জন করে বের হন। তাঁর যেন চাকরি পেতে সমস্যা না হয়, উদ্যোক্তা হতে চাইলে উদ্যোক্তা হতে পারেন।’