রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রায় ৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার নিয়োগ কার্যক্রম। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। তবে এ স্থবিরতা কাটিয়ে দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে চান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব।
শনিবার (২৮ আগস্ট) শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রম সম্পর্কে কথা বলেন রাবি উপাচার্য।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক নকীব জানান, “আমি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে চাই। তবে এক্ষেত্রে বিগত সময়গুলোতে নিয়োগে যে ইঞ্জিনিয়ারিং হয়েছে সেসব বিষয় আগে আমাদের ঠিকঠাক করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য ইতোপূর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন ছিল।”
রাবি উপাচার্য আরো জানান, “নিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের বোর্ডগুলোকে আগে ঠিক করতে হবে। কোনো একটা সাজানো প্রক্রিয়া বলবৎ রেখে আমরা নিয়োগ শুরু করতে চাই না। কোনো নির্দিষ্ট মতাদর্শের বা কোনোভাবে কাউকে প্রোমোট করার জন্য যদি কোনো প্রক্রিয়া সাজানো থাকে—তাহলে অবশ্যই সেটাকে পরিবর্তন করবো; এটুকু করতে যতটুকু সময় লাগবে আমরা ততটুকু নেবো। সুষ্ঠু নিয়োগের ক্ষেত্রে মেরিট এবং দক্ষতাই যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি বলে আমি মনে করি।”
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সব ধরনের নিয়োগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সমুন্নত রাখার স্বার্থে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান ও নীতিমালা অনুসরণ করে সুষ্ঠুভাবে সব নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অনুমতি দেয়া হলো।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১০ ও ১৩ ডিসেম্বর পৃথক ১২টি নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতরের এক তথ্য অনুযায়ী, রাবিতে বর্তমানে ১৪৯০টি শিক্ষক পদের মধ্যে শূন্য ৪৩৫টি। অর্থাৎ বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন ১০৫৫ জন। তাদের মধ্যে আবার ৫৬ জন শিক্ষক সম্প্রতি অবসরে গেছেন এবং কিছুসংখ্যক শিক্ষক মারা গেছেন। অন্য দিকে কর্মকর্তার ৭৯২টি পদের মধ্যে শূন্য ২০০টি, সহায়ক কর্মচারীর ১ হাজার ৪২টি পদের মধ্যে শূন্য ২৫১টি। এ ছাড়া সাধারণ কর্মচারীর ১ হাজার ৯০৯টি পদের মধ্যে শূন্য ৯০৯টি।