The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপালা

শাকিল বাবু, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ঃ আগে দূরে কোনো মাইক থেকে আওয়াজ আসত ‘হৈ হৈ কান্ড, আর রৈ রৈ ব্যাপার। চলিতেছে যাত্রা যাত্রা।” সেটা খুব বেশি দিনের কথাও না। তবে কালক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে এই গ্রামবাংলার সকলে প্রিয় ও বিনোদনের অন্যরকম সারা জাগানো আকর্ষণ ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপালা।

ছোট থেকে বৃদ্ধ সকলেই একসাথে যেত যাত্রা দেখতে। অন্যরকম এক মেলবন্ধন সৃষ্টি হতো সকলের মাঝে। পালায় পালায় কোনো এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফুটিয়ে তুলে নানান চরিত্র। কখনো ট্রাজেডি আবার কখনো বা কমেডি সংলাপ দিয়ে মানুষের মনকে উত্তাল করে তুলতো এই যাত্রাপালায় অভিনয় করা শিল্পীরা। পুরোনো কাহিনী নির্ভর বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে যাত্রাপালায় অভিনয় করা হয়। উল্লেখযোগ্য কিছু কাহিনীর মধ্যে রয়েছে ‘লাইলি মজনু’, ‘কাশেম মালার প্রেম’, ‘রুপবান’, ‘শিরি-ফরহাদ’, ‘আপন-দুলাল’ ইত্যাদি। এইসকল কাহিনী নিয়েই বেশিরভাগ যাত্রাপালাগুলো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অনেক গ্রামেই যাত্রাপালার রীতি থাকলেও তা অনেক কমই চোখে পড়ে এখন। তবে বলছি কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার কথা। এখানে অনেক অঞ্চলেই এখনো দেখা মেলে যাত্রাপালা অনুষ্ঠানের। বিশেষকরে শীতের সময় এর আয়োজন হয়ে থাকে। কোনো ফাঁকা মাঠে কিংবা বালুর চরের কোনো ফাঁকা জায়গায় আয়োজন করা হয় এই ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপালা। আর এটি দেখতে ভীড় জমায় শিশু, কিশোর, জোয়ান, বৃদ্ধ, পুরুষ-মহিলা সকলেই। ট্রাজেডি কাহিনী হলে কেউ বা কান্নায় ফেটে পড়ে। আর কমেডি হলে হাসির জোয়ার বয়ে যায় সকলের মাঝে। এখানকার মানুষের মাঝে যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য মনোভাব, ভালোবাসা এবং সম্পর্কবোধ রয়েছে, তা বুঝা যায় একত্রিত হয়ে যাত্রাপালা দেখার মাঝে দিয়ে।

রৌমারী উপজেলার বলদমারা গ্রামের বাসিন্দা গোলজার আহমেদ বলেন, ” শীতের সময়ে যাত্রাপালা আমাদের এখানে বেশি হয়। আমরা সকলেই একসাথে উপভোগ করি। তবে আগে অনেক বেশি হতো। এখন খুব কম হয় যাত্রাপালা। আশা করি আমরা আমাদের পুরাতন সংস্কৃতি ধরে রাখতে সক্ষম হবো।”

ঐতিহ্যবাহী এই যাত্রাপালা যেন চিরতরে হারিয়ে না যায় তার জন্যই এমন আয়োজন করে থাকে এখানকার মানুষ। সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে রৌমারী এলাকার মানুষ।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.