বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ছয় দিন পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বিনোদপুর বাজার। ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। কিন্তু নেই ক্রেতা সমাগম। শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে বিনোদপুর বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় সংঘর্ষে এতদিন বিনোদপুর বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। সংঘর্ষের ছয়দিন পর বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের পুড়ে যাওয়া ও ভেঙে যাওয়া দোকানপাট মেরামতের পর খুলেছেন। কিন্তু সেখানে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। বাজারের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বিনোদপুরে বাজারে কেনাকাটা করে থাকেন। তবে সংঘর্ষের দিন থেকে তারা বিনোদপুরে বাজারে যাচ্ছেন না। অনেকেই বিনোদপুর বাজারকে বয়কটের ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে পোস্ট করেছেন। তারা কেনাকাটার জন্য বেছে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের স্টেশন বাজার। অনেক শিক্ষার্থী আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কাঁচাবাজার বসানোর চিন্তাভাবনা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিনোদপুর বাজারে প্রায় দুশতাধিক দোকান আছে। এর মধ্যে বাজারের অলিগলিতে এখনো অনেক দোকান বন্ধ। খোলা দোকানগুলোর মধ্যে অধিকাংশই সবজি, মাছ ও মুরগির। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর বাজারে যাচ্ছেন না। ফলে বেচাকেনা নেই দোকানিদের।
বিনোদপুর বাজারের উত্তর পাশে মো. বাদশাহ ও আলাউদ্দিন নামের দুই ব্যক্তি খাঁচায় কিছু মুরগি নিয়ে বসেন। বাদশাহ বলেন, সকাল থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সাত-আটটি মুরগি বিক্রি করতে পেরেছি। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী আসেননি। যারা কিনেছেন তারা সবাই বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজার সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছি। তাদের সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমেই এটাকে সমাধান করতে হবে। শিক্ষার্থীরাই এ বাজারের প্রাণ। তাদের সঙ্গে আমাদের আগের সম্পর্ক ফিরে আসুক এটাই প্রত্যাশা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান- উল-ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। ক্লাসের পাশাপাশি পরীক্ষাও চলছে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কাজে মন দিচ্ছেন। পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজও চলছে।
বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় মেস মালিকদের সঙ্গে বসেছি আমরা। সেখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভালো আচরণের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে বিনোদপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা আছে। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে।
উল্লখ্য, গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাসচালকের তর্কাতর্কির জেরে নগরের বিনোদপুর বাজারে সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও লোকজন এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।