দেশের কিডনি রোগীদের ভরসাস্থল ছিলো গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেই গণস্বাস্থ্য হাসপাতালেরই প্রতিষ্ঠাতা না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কিডনি জটিলতায় ভুগে। যদিও উন্নত চিকিৎসা ও কিডনি প্রতিস্থাপনে বিনা খরচে বিদেশে চিকিৎসার প্রস্তাব করা হয়েছিল তাকে, সেই প্রস্তাবে সরাসরি ‘না’ বলেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ।
ডা. জাফরুল্লাহর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সমন্বয়কারী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মামুন মোস্তাফী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে অবস্থার উন্নতি না হলেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে চাননি।
তিনি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহর শেষ ইচ্ছা ছিল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসা নিয়ে মরতে চান। উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও তিনি রাজি হননি।
এর আগে ২০২০ সালে কোভিড মহামারির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সেই সময়ে বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় তার অবস্থা ছিল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তখন তাকে কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ায় কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হলে তিনি এক বাক্যে নাকচ করে দিয়েছেন।
কেন সেই পরামর্শে রাজি হননি জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বাইরে করাব না। বিদেশে যাব না। আমরা একটি কিডনি প্রতিস্থাপন কেন্দ্র করতে যাচ্ছি। করোনা না হলে এত দিনে প্রায় শুরু হতো।’
এর আগে ২০১৪ সালের দিকে তার কিডনিতে প্রথম সমস্যা শুরু হলে বিদেশি বন্ধুরাও তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেটি স্মরণ করিয়ে দিলে একটি গণমাধ্যমকে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘হ্যাঁ। আমাকে হার্ভার্ড বলেছিল, বিনা পয়সায় কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেবে। আমি বলেছি, তুমি বাকিদের করবা? খালি আমার তো করবা। আমি বলেছি, আমি আমার দেশে চিকিৎসা করাতে চাই, চিকিৎসা উন্নত করতে চাই। সবাই যেন সুযোগটা পায়।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। গত বুধবার তাকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।