The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪

বাসন মাজা তরুণটি ৬০০ কোটি রুপির মালিক হলেন যেভাবে

জীবনের তাগিদে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান যখন তখন তার বয়স ২২। টিকে থাকতে শুরুতে রেস্তরায় রাসন মেজেছেন। ভ্যানচালিয়ে মথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করেছেন। একদা বাসন মাজা সেই তরুণ আজ যুক্তরাজ্যে ৬০০ কোটি রুপি সম্পদের মালিক।

পঞ্জাবের বাসিন্দা এই তরুনের নাম তেজিন্দর সিং শেখন। পাঞ্জবের লুধিয়ানা কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক শেষে ২০০২ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। যুক্তরাজ্যে তেজিন্দর রিয়েল এস্টেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম রেডস্কাই হোমস গ্রুপ। এই প্রতিষ্ঠান লন্ডনের আশপাশে ফ্ল্যাট নির্মাণ করে। পরে সেগুলো ভাড়া দেয়।

খুব ছোট থাকতে তেজিন্দর তার বাবাকে হারান। দুই একর জমি চাষাবাদে মন দেন তাঁর মা। তেজিন্দর শস্যখেত ও গবাদিপশু লালন-পালনে মাকে সাহায্য করতেন।

তেজিন্দর যখন খুব ছোট, তখন তাঁর বাবা মারা যান। বাবার রেখে যাওয়া দুই একর জমি চাষাবাদে মন দেন তাঁর মা। তেজিন্দর শস্যখেত ও গবাদিপশু লালন-পালনে মাকে সাহায্য করতেন। সকালে মার সঙ্গে কাজ করার পর স্কুলে যেতেন।

১৯৯৭ সালে তিনি কলেজের গণ্ডি পার করেন। তেজিন্দরের ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে চাকরি করার। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করতে না পারায় দেশ ছাড়েন তিনি। চলে যান হংকংয়ে। কিন্তু সেখানেও কোনো চাকরি না পাওয়ায় দেশে ফিরে আসেন। এ অবস্থায় বোনদের বিয়ের সময় আসে। বিয়ের খরচের জন্য জমি বিক্রি করতে বাধ্য হতে হয় তাঁকে। সেই অর্থে ২০০০–২০০১ সালে তাঁর দুই বোনের বিয়ে হয়। এরপর ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান।

যুক্তরাজ্যে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় তেজিন্দরকে। শুরুতে তাঁর কাজ ছিল মাটি কাটা, বেতন ৪০ পাউন্ড। কিন্তু একটি অ্যাপার্টমেন্টে সপ্তাহে ছয় হাজার রুপি ভাড়ায় তাঁকে থাকতে হতো। এ কারণে তিনি বাড়তি কাজ হিসেবে বাসন মাজার কাজ খুঁজে নিয়েছিলেন।

একটি ব্যাংক থেকে তিন লাখ রুপি ঋণ নিয়ে একটি ডেলিভারি ভ্যান কিনেছিলেন। সেই ভ্যান নিজেই চালিয়ে পানীয় ডেলিভারির শুরু করেন তিনি। এভাবেই শুরু হয় তাঁর মদের ব্যবসা। রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরুর আগে তেজিন্দর মদের ব্যবসা করেছেন। এই ব্যবসা সফল হলেও তিনি কখনো মদ্যপান করেননি। পরে এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিক্রি করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন তিনি।

২০০৫ সালে আবারও ঋণ নিয়ে একটি বাড়ি কেনেন তেজিন্দর। তিনি আগের বাসায় তাঁর সঙ্গে থাকা সঙ্গীদের নিজের বাড়িতে ভাড়া দিয়ে থাকার প্রস্তাব দেন। সেই অর্থ দিয়ে ধীরে ধীরে তিনি বাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করেন। ২০১৫ সালে মদের ব্যবসা বিক্রি করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন।

সম্প্রতি তেজিন্দর ২০২ কোটি রুপির একটি নতুন প্রকল্প চালু করেছেন। পাঞ্জাবে তাঁর নিজ গ্রামের নামে ওই ভবনটির নাম দিয়েছেন ‘বারুনদি কোর্ট’।

২০০৭ সালে সুখবীর কউর শেখনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। তাঁদের দুই ছেলেসন্তান। তেজিন্দরের ব্যবসার ৫০ শতাংশের অংশীদার তাঁর স্ত্রী সুখবীর। বারুনদিতে বর্তমানে তাঁর একটি খামারবাড়ি আছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. উদ্যোক্তা ও সফলতার গল্প
  3. বাসন মাজা তরুণটি ৬০০ কোটি রুপির মালিক হলেন যেভাবে

বাসন মাজা তরুণটি ৬০০ কোটি রুপির মালিক হলেন যেভাবে

জীবনের তাগিদে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান যখন তখন তার বয়স ২২। টিকে থাকতে শুরুতে রেস্তরায় রাসন মেজেছেন। ভ্যানচালিয়ে মথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করেছেন। একদা বাসন মাজা সেই তরুণ আজ যুক্তরাজ্যে ৬০০ কোটি রুপি সম্পদের মালিক।

পঞ্জাবের বাসিন্দা এই তরুনের নাম তেজিন্দর সিং শেখন। পাঞ্জবের লুধিয়ানা কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক শেষে ২০০২ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। যুক্তরাজ্যে তেজিন্দর রিয়েল এস্টেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম রেডস্কাই হোমস গ্রুপ। এই প্রতিষ্ঠান লন্ডনের আশপাশে ফ্ল্যাট নির্মাণ করে। পরে সেগুলো ভাড়া দেয়।

খুব ছোট থাকতে তেজিন্দর তার বাবাকে হারান। দুই একর জমি চাষাবাদে মন দেন তাঁর মা। তেজিন্দর শস্যখেত ও গবাদিপশু লালন-পালনে মাকে সাহায্য করতেন।

তেজিন্দর যখন খুব ছোট, তখন তাঁর বাবা মারা যান। বাবার রেখে যাওয়া দুই একর জমি চাষাবাদে মন দেন তাঁর মা। তেজিন্দর শস্যখেত ও গবাদিপশু লালন-পালনে মাকে সাহায্য করতেন। সকালে মার সঙ্গে কাজ করার পর স্কুলে যেতেন।

১৯৯৭ সালে তিনি কলেজের গণ্ডি পার করেন। তেজিন্দরের ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে চাকরি করার। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করতে না পারায় দেশ ছাড়েন তিনি। চলে যান হংকংয়ে। কিন্তু সেখানেও কোনো চাকরি না পাওয়ায় দেশে ফিরে আসেন। এ অবস্থায় বোনদের বিয়ের সময় আসে। বিয়ের খরচের জন্য জমি বিক্রি করতে বাধ্য হতে হয় তাঁকে। সেই অর্থে ২০০০–২০০১ সালে তাঁর দুই বোনের বিয়ে হয়। এরপর ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান।

যুক্তরাজ্যে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় তেজিন্দরকে। শুরুতে তাঁর কাজ ছিল মাটি কাটা, বেতন ৪০ পাউন্ড। কিন্তু একটি অ্যাপার্টমেন্টে সপ্তাহে ছয় হাজার রুপি ভাড়ায় তাঁকে থাকতে হতো। এ কারণে তিনি বাড়তি কাজ হিসেবে বাসন মাজার কাজ খুঁজে নিয়েছিলেন।

একটি ব্যাংক থেকে তিন লাখ রুপি ঋণ নিয়ে একটি ডেলিভারি ভ্যান কিনেছিলেন। সেই ভ্যান নিজেই চালিয়ে পানীয় ডেলিভারির শুরু করেন তিনি। এভাবেই শুরু হয় তাঁর মদের ব্যবসা। রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরুর আগে তেজিন্দর মদের ব্যবসা করেছেন। এই ব্যবসা সফল হলেও তিনি কখনো মদ্যপান করেননি। পরে এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিক্রি করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন তিনি।

২০০৫ সালে আবারও ঋণ নিয়ে একটি বাড়ি কেনেন তেজিন্দর। তিনি আগের বাসায় তাঁর সঙ্গে থাকা সঙ্গীদের নিজের বাড়িতে ভাড়া দিয়ে থাকার প্রস্তাব দেন। সেই অর্থ দিয়ে ধীরে ধীরে তিনি বাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করেন। ২০১৫ সালে মদের ব্যবসা বিক্রি করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন।

সম্প্রতি তেজিন্দর ২০২ কোটি রুপির একটি নতুন প্রকল্প চালু করেছেন। পাঞ্জাবে তাঁর নিজ গ্রামের নামে ওই ভবনটির নাম দিয়েছেন ‘বারুনদি কোর্ট’।

২০০৭ সালে সুখবীর কউর শেখনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। তাঁদের দুই ছেলেসন্তান। তেজিন্দরের ব্যবসার ৫০ শতাংশের অংশীদার তাঁর স্ত্রী সুখবীর। বারুনদিতে বর্তমানে তাঁর একটি খামারবাড়ি আছে।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন