শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রে প্রতিষ্ঠানটির আরও অনেকের নাম বেরিয়ে এসেছে। এর মধ্যে একজন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তার নামও রয়েছে।
গত শুক্রবার মাউশির অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে ঢাকার ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। ৫১৩টি পদের জন্য পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার।
এদিকে, এই পরীক্ষা বাতিলের চিন্তা করছে মাউশি। দু-একদিনের মধ্যে এই ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে মাউশি মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, পুলিশের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেব। আমরা পুলিশকে বলেছি, যেন এর শিকড় সন্ধান করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) সূত্র বলছে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বণ্টনে কর্তৃপক্ষ পাঁচটি কমিটি গঠন করেছিল। তার মধ্যে দুটি কমিটির সদস্যরা প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিল- এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া মাউশির দু’জন উচ্চমান সহকারীকেও খোঁজা হচ্ছে। তারা হলেন আহসান হাবিব ও নওশাদ। জালিয়াতির ঘটনায় তাদের বড় ধরনের ভূমিকা ছিল।
তদন্তে উঠে এসেছে, পরীক্ষার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে প্রশ্নফাঁস হয়। অনেকের প্রবেশপত্রে ৭০ নম্বরের উত্তর লেখা ছিল। এরই মধ্যে সুমন জোয়াদ্দার নামে যাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি, তার প্রবেশপত্রেও প্রশ্নের উত্তর লেখা ছিল।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, প্রশ্নফাঁস হয়েছে- এর সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত আমরা পেয়েছি। যারা প্রশ্নপত্র বিতরণ কমিটিতেও ছিলেন, তাদের কয়েকজন এর সঙ্গে জড়িত। মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাতে বঞ্চিত না হন, এটা নিশ্চিত করতে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো জরুরি।
প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষক আবদুল খালেক বাদী হয়ে মামলা করেন। এজাহারে তিনি বলেন, বিকেল ৩টায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে পরীক্ষা শুরু হয়।
তবে পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জোয়াদ্দার স্বীকার করেন, তার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দুপুর ২টা ১৮ মিনিটে তার কাছে উত্তরপত্র আসে। এটি পাঠিয়েছেন পটুয়াখালীর সাইফুল ইসলাম ও টাঙ্গাইলের খোকন। অভিযুক্ত সাইফুল পটুয়াখালীর কলাপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক।