বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সিটি ব্যাংকের অনুদানে ৪ কোটি টাকার ৩ বছর মেয়াদী ২২টি গবেষণা প্রকল্পের উদ্বোধনী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ‘সিটি ব্যাংক অর্থায়নে গবেষণা এবং উদ্ভাবনী উপ-প্রকল্পসমূহ’ শীর্ষক কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে তিনটি টেকনিক্যাল সেশনে মোট ২২ টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহফুজা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর এবং সিটি ব্যাংকের বাণিজ্যিক ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মাহমুদ গনি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অধ্যাপক ড. চয়ন গোস্বামী বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো সিটি ব্যাংক তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় কৃষিক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের জন্যে গবেষণা অনুদান দিয়েছে। যা অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। সম্পূর্ণ অনুদানের অর্থ হাওর অঞ্চলের কৃষি সেক্টরের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। হাওরের প্রধান সমস্যার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়, প্রাকৃতিক দূর্যোগ, আকস্মিক বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি, ফসলের উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়া এবং দুর্বল বাণিজ্যিক সমন্বয় ও মূল্য সংযোজন। উন্নত পানি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য নিরাপত্তার জন্যে কৃষির উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি ও জলাশয় ব্যবস্থাপনা, উন্নত বাহ্যিক অবকাঠামো এবং প্রযুক্তি ও উদ্যোগের উন্নয়নের মাধ্যমে কৌশলগতভাবে হাওর অঞ্চলের কৃষি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন সম্ভব হবে। আমাদের গবেষকগণ হাওরের ৭টি অঞ্চলেই গবেষণার মাধ্যমে সেই অঞ্চলের কৃষিক্ষেত্রের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের হাওর অঞ্চলে রয়েছে অগণিত সম্পদ। যা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। পাশাপাশি হাওড়কে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের খাদ্যসংস্থানের পেছনে প্রধান কান্ডারি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে বাকৃবি। ডাচ বাংলাও কৃষি গবেষণায় এগিয়ে এসেছে। ব্র্যাক ব্যাংকও কিছু আর্থিক সহায়তা দিবে। আমি অন্যান্য ব্যাংকগুলোকেও আহবান জানাই শিক্ষা ও গবেষণায় তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জন্য। আমি বিশ্বাস করি এই প্রকল্পের ফলাফল দেশের কাজে লাগবে। স্কোপাস ইন্ডেক্সে আগামী দুই বছরের মধ্যেই গবেষণাপত্র প্রকাশ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, শস্যের জাতের বৈচিত্র্যতায় বাংলাদেশ এক নম্বর বলা যায়। গবেষণার মাধ্যমে বাকৃবি দেশের জন্যে অনেক কিছুু করেছে জন্যে আমরা গর্ববোধ করি। বিশ্ব পর্যায়ের গবেষণার জন্যে আমাদের আরও গবেষণামুখী হতে হবে। আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্যে গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। পিএইচডির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত করতে তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ফেলোশিপের ব্যবস্থা করলে তারা গবেষণায় সময় দিবে। এক্ষেত্রে গবেষণার মানোন্নয়ন হবে।