বাকৃবিতে সোনালী দলের মিছিলে ছাত্রলীগের ধাওয়া
বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দলের মৌন মিছিলে বাধা প্রদান ও ধাওয়া করে শিক্ষকদের লাঞ্চনা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ১টায় সোনালী দলের মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের করিডোরে উপস্থিত হলে ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ শতাধিক নেতাকর্মীদের দ্বারা বাধা ও ধাওয়ার সম্মুখীন হয় সোনালী দলের শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে দুপুর সাড়ে ১২টায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে একটি মৌন মিছিল বের করার প্রস্তুতি নেন বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দল। এসময় সোনালী দলের মৌন মিছিলে বাধা প্রদান করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে মিছিলটি ভেটেরিনারি অনুষদের সামনে থেকে শুরু করতে বাধ্য হয় সোনালী দলের শিক্ষকরা। পরবর্তীতে তারা মিছিল নিয়ে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ, পশুপালন অনুষদ, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ হয়ে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের করিডোরে আসলে শাখা ছাত্রলীগের মুখোমুখি হয়। এতে সোনালী দলের মিছিলটি পশুপালন অনুষদের দিকে মোড় নিতে বাধ্য হয়। এসময় উত্তেজনামূলক বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে পিছু ধাওয়া করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পশুপালন অনুষদে সোনালী দলের মিছিলটি ঘেরাও করে বন্ধ করে দেয়।
সোনালী দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গতকাল প্রক্টরের কাছ থেকে লাইব্রেরির সামনে একটি মৌন মিছিলের অনুমতি চাইলে তিনি আমাদের ভেটেরিনারি অনুষদের সামনে থেকে মিছিলটি করতে বলেন। সেই প্রেক্ষিতে আমরা ভেটেরিনারি অনুষদের সামনের চত্বরে জড়ো হয়ে মিছিলটি শুরু করি। এই পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, উত্তেজনাকর স্লোগান দিতে থাকে। আমরা মিছিল নিয়ে সামনে অগ্রসর হলে তারা আমাদের পিছু নেয়। পরবর্তীতে আমরা ভেটেরিনারি অনুষদের সামনে আসলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিলের মুখোমুখি অবস্থান করে। এমতাবস্থায় অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে কোনোরকম বক্তব্য প্রদান ব্যতীত মিছিল শেষ করে ফিরে আসতে থাকি। তখন আমরা আমাদের ব্যানার নিয়ে চলে আসার সময় তারা ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্ট করে। শারীরিক আঘাত না করলেও আমাদের মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সোনালী দলের মৌন মিছিল তাদের নির্দিষ্ট স্থান ও সময়ের বাইরে চলমান রাখায় সেখানে ছাত্রলীগ কর্মীরা অবস্থান নিয়ে তাদেরকে বাধা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সরকার বিরোধী কোন কাজ করতে পারেন না। শিক্ষকের পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আমিও পারি না সরকার বিরোধী কাজ করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী শিক্ষকরা রাজনীতি করতে পারেন না। রাজনীতির সমর্থনে শিক্ষকদের অঙ্গসংগঠন থাকতে পারে। তবে জাতীয়ভাবে হরতাল অবরোধের সমর্থনে শিক্ষকদের কোন কর্মকান্ড থাকতে পারে না।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসানের সাথে মুঠোফেনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।