বাকৃবি প্রতিনিধি: জুনোটিক (প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত করতে পারে) রোগের মধ্যে অন্যতম প্রাণঘাতী রোগ জলাতঙ্ক বা র্যাবিস। মানুষ বা প্রাণিতে এই রোগের লক্ষণ একবার প্রকাশ পেলে অবধারিত মৃত্যু ছাড়া তার আর কোন প্রতিকার নেই। জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায় ভ্যাকসিন বা টিকা প্রদান। জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের সংগঠন অ্যানিম্যাল সেভিয়ার্স বাউ পোষা প্রাণিতে তিন দিনব্যাপী বিনামূল্যে জলাতঙ্ক রোগের টিকা প্রদান ক্যাম্পেইন করেছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) তিনদিনব্যাপী চলমান ক্যাম্পেইনের সমাপনী দিনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে কৃষি অনুষদের করিডোরে টিকা প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, ক্যাম্পেইনে বাকৃবি ক্যাম্পাসের আশেপাশের এলাকা থেকে বিভিন্ন পোষা প্রাণী যেমন, কুকুর, বিড়াল, খরগোশ ইত্যাদি প্রাণির জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ক্যাম্পাসের আশেপাশের কেওয়াটখালি, সুতিয়াখালী, শেষ মোড় ইত্যাদি এলাকা থেকে পোষা প্রাণির মালিকেরা তাদের প্রাণী নিয়ে আসেন এবং ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেন।
নিজের পোষা কুকুরের জন্য ভ্যাকসিন নিতে আসা আদনান রহমান বলেন, আমার পোষা প্রাণি পাপেটকে নিয়ে গিয়েছিলাম শিক্ষার্থীদের র্যাবিস ভ্যাকসিনেশান ক্যাম্পেইনে। উনারা এখানে পাপেটের প্রাথমিক শারীরিক চেকআপ করে এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন এবং এরপর ভ্যাক্সিন দিয়ে দেন। তারা সবাই প্রাণীর চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক আন্তরিক ছিলেন।
এ বিষয়ে বাকৃবি স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ডা. উমর ফারুক বলেন, জলাতঙ্ক (Rabies) একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা সাধারণত জলাতঙ্ক ভাইরাস এ আক্রান্ত কুকুর, বিড়াল, বুনো শেয়াল, বাদুড় এবং অন্যান্য প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই রোগ মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। একবার জলাতঙ্কের লক্ষণ প্রকাশ পেলে, এটি প্রায় নিশ্চিতভাবে প্রাণঘাতী। কামড়ের পরপরই আক্রান্ত স্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে ফেলা এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রতিষেধক টিকা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এখানে সমস্যা হচ্ছে আমাদের অনেক পোষাপ্রাণিপ্রেমী ভাই বোনেরা আছেন যারা অনেক সময় পোষাপ্রাণির(জলাতঙ্ক টিকাবিহীন)আচর বা কামড়ে অনেক সময় গুরুত্ব দেন না। যার ফলে অনেক সময় জলাতঙ্কে আক্রান্ত হতে পারে। পোষা প্রাণীদের নিয়মিত টিকাদানের মাধ্যমে এই রোগকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।