বাকৃবি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আন্তর্জাতিক ছাত্র সংগঠন স্মার্ট এগ্রো টেকনোলজি ইনোভেশন ইয়ুথ নেটওয়ার্ক (সায়ান) আয়োজিত গবেষণার বিষয়বস্তু ধারণা প্রদান প্রতিযোগিতা-২০২৩ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ওই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। ‘ভবিষ্যৎ কৃষির অবকাঠামো গঠনে স্মার্ট উদ্ভাবন’ শীর্ষক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দলীয় ধারণা উপস্থাপন করেন বিজয়ী প্রতিযোগীরা।
প্রতিযোগিতায় প্রাথমিকভাবে সেরা দশটি গবেষণার বিষয়বস্তু ধারণা বাছাই করা হয়। পরবর্তীতে সেরা তিনটি ধারণা উপস্থাপনকারী প্রতিটি দলকে পুরস্কার হিসেবে সনদ, ক্রেস্ট এবং চারশত ডলার দেওয়া হয়। দলগুলো হলো খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রো-প্রটেক্টর দল, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় অব টেকনোলজির সমন্নিত জেন-গ্যাপ দল এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইলেজ-স্যাভি দল।
অনুষ্ঠানে সেরা তিনটি দল তাদের ধারণার বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি ধারণগেুলোকে গবেষণায় কাজে লাগিয়ে কৃষির ওপরে তার প্রভাব নিয়েও আলোচনা করা হয়। পরবর্তীতে উপস্থাপিত ধারণাগুলোর উপর একটি উম্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন কনসোর্টিয়াম (এএসএমসি) প্রকল্প পরিচালক ও যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রশান্ত কে. কালিতা এবং সেনেগালের ইন্সটিটিউট সেনেগালাইস দ্য রিসারসেস এগ্রিকোলস এর পরিচালক ড. অ্যালিয়ুু ফায়ে।
এসময় কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশে আমরা এখন কৃষি যান্ত্রিকীকরণের খুব একটা সম্ভাব্য সময়ে আছি। দেশকে শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে নিতে দিনে দিনে শিল্পকারখানার সংখ্যা বাড়ছে। ফলস্বরূপ কৃষি শ্রমিকেরা শিল্পকারখানাগুলোর দিকে বেশি ঝুঁকছেন। এই শ্রমিক সংকট দূর করার জন্য হলেও কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ জরুরি। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ গবেষণার এসকল ছোটো আকারের উদ্ভাবনী চিন্তাগুলোর মাধ্যমেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। স্মার্ট কৃষির স্বপ্নকে লালন করতে হবে। স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।
এসময় ড. অ্যালিয়ুু ফায়ে বলেন, সেনেগালের জলবায়ু কৃষি কাজের জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। বিশেষ করে সেনেগালে খুবই অল্প পরিমাণে বৃষ্টি হয় যার কারণে আমাদের কৃষিজ উৎপাদন অনেক কম। বর্তমানে আমাদের দেশেও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তরুণসমাজকে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত হতে অনুপ্রাণিত করা হচ্ছে।
অধ্যাপক প্রশান্ত কে. কালিতা বলেন, কৃষি এবং যান্ত্রিকীকরণ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। যান্ত্রিকীকরণ ছাড়া বর্তমান কৃষি চিন্তা করা যায় না। বিশেষত বাংলাদেশের মতো ছোটো আয়তনের দেশে যান্ত্রিকতার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের সাথে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করাও এখন কৃষির একটি লক্ষ্য। ছাত্রদের কাছে থেকে বিভিন্ন গবেষণার যে ধারণাগুলো পাওয়া যায় সেগুলো নিয়ে আরো বিস্তারিত কাজ করা দরকার। বাংলাদেশের জমিগুলো দিনে দিনে খন্ডিত হচ্ছে। জমির আকার ছোটো হচ্ছে। ছোটো জমির জন্যে উপযুক্ত যন্ত্রপাতি তৈরি করতে হবে। সেগুলোর অর্থনৈতিক সুবিধা কৃষকদের বোঝাতে হবে।
উল্লেখ্য, সায়ান থেকে গত ২৮ মার্চ কৃষি বিষয়ক গবেষণার বিষয়বস্তু ধারণা প্রদানের জন্য সার্কুলার দেওয়া হয়। জমাকৃত ধারণাগুলো থেকে ২৮ আগস্ট সেরা দশটি ধারণা বাছাই করে ফলাফল জানানো হয়।