বাকৃবি প্রতিনিধি: দেশে প্রথমবারের মতো আধুনিক কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও জীবাশ্মসম্পদের দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে চতুর্থ কৃষি বিপ্লব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ শীর্ষক এ সম্মেলনে কৃষির টেকসই উন্নয়ন ও লাভজনক কৃষি নিশ্চিতকরণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
আগামী ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, কৃষি প্রকৌশলী, নীতিনির্ধারক, উদ্যোক্তা ও কৃষকসহ তিন শতাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসএএমবিই) এবং বাকৃবির কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগ যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করছে।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসএএমবিই) এবং বাকৃবির কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগ যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করছে। দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, কৃষি প্রকৌশলী, নীতিনির্ধারক, উদ্যোক্তা ও কৃষকসহ মোট তিন শতাধিক অংশগ্রহণকারী এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসকল তথ্য জানান সম্মেলনের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আওয়াল। কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো আব্দুল মজিদ,আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিক-ই-রব্বানী, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. টুম্পা রাণী সরকারসহ আয়োজক কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
দেশের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও জীবাশ্মসম্পদের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এই সম্মেলনে প্রভাব বিস্তারের বিষয়ে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, বর্তমান বিশ্বে কৃষির চিত্র দ্রুত বদলাচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, আইওটি, জিপিএস ও জিআইএস প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষির উৎপাদনশীলতা যেমন বাড়ছে, তেমনি শ্রম ও ব্যয়ের পরিমাণ কমে আসছে। তবে এসব প্রযুক্তি কীভাবে দেশের কৃষি ব্যবস্থায় কার্যকরভাবে একীভূত করা যাবে, কীভাবে কৃষকরা এর সুবিধা পাবেন এবং কীভাবে এটি কৃষিকে আরও লাভজনক করে তুলবে- এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্যই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সম্মেলনে বাংলাদেশের কৃষি প্রকৌশলীরা কীভাবে কৃষির টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে এবং সরকার, নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী ও কৃষকের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কীভাবে কৃষি যান্ত্রিকীকরণকে লাভজনক করা যায়- এসব বিষয় নিয়ে সরকারি পর্যায় থেকে প্রান্তিক কৃষক পর্যন্ত সকলের মতামত নেওয়া হবে । দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, নীতিনির্ধারক ও উদ্যোক্তাদের উপস্থিতিতে এই সম্মেলন হবে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞান আদান-প্রদানের এক বিশাল ক্ষেত্র।
এসময় আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিক-ই-রব্বানী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চীন, জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কৃষি গবেষক ও প্রযুক্তিবিদরা এই সম্মেলনে অংশ নেবেন। ছয়টি টেকনিক্যাল সেশন, একটি ব্যবসায়িক সেশন এবং দুটি পোস্টার সেশনে মোট ১৬০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। এছাড়াও একটি কৃষি যন্ত্রপাতি মেলার আয়োজন করা হবে যেখানে দেশের স্বনামধন্য আটটি প্রতিষ্ঠান তাদের কৃষিবিষয়ক যন্ত্রপাতি ও আধুনিক প্রযুক্তিগুলো প্রদর্শন করবেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিগুলোও প্রদর্শন করা হবে।
আয়োজকবৃন্দ আরও জানান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় চতুর্থ কৃষি বিপ্লবের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও জীবাশ্মসম্পদের দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সম্মেলনে যেসকল সুপারিশ উঠে আসবে সেগুলো নিয়ে পরবর্তীতে কাজ করবে বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসএএমবিই)। দেশের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে এই সুপারিশগুলো লিখিত আকারে প্রদান করা হবে। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্যই হলো আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষির সমস্যা, সমাধান ও উন্নয়নের সকল তথ্য কৃষির সকল পর্যায়ের ব্যক্তবর্গের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া।