নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে বলেই এ জয়ের মাহাত্ম্য অনেক। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, এই জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভাবনাচিন্তার জগৎটাকে আমূলে বদলে দিতে পারে। ভারতের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন মনে করেন, এই টেস্ট জয় প্রমাণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ বিদেশেও জিততে পারে।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বলেই এই টেস্ট জয়ের মাহাত্ম্য এত। ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ১৬টি টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাত্র ৬টি বিদেশের মাটিতে। এর ২টি ওয়েস্ট ইন্ডিজে, ২টি জিম্বাবুয়ে ও একটি শ্রীলঙ্কায়। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান শিরোপাধারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতেই জয় যেকোনো বিচারে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেরা সাফল্য। আজহার মনে করেন, বিদেশের মাটিতে এই অসাধারণ জয়টা বাংলাদেশ পেয়েছে নিজেদের সামর্থ্যের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে।
সাবেক এই তারকা বলেন, ‘এটি ঐতিহাসিক এক জয়। আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানাই। নিজের সামর্থ্যের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ।’ আজহার মনে করেন, এই জয় সবাইকে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের সম্পর্কেই একটা বড় বার্তা দিয়েছে, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতেই এই জয় দেখিয়ে দিল, বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা যদি নিজেদের খেলাটা খেলতে পারে, তাহলে বিদেশের মাটিতে জেতা কোনো ব্যাপারই না।’
প্রতিভা অনুযায়ী খেলতে না পারা। নিজেদের সামর্থ্যের ওপর বিশ্বাস না রাখা, দেশের ক্রিকেটের এক পুরোনো রোগই। আমরা পারি—এই ব্যাপারটি মাথায় থাকলে অনেক সময় কাজটা সহজ হয়ে যায়। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশ ছিল পুরোপুরি অন্য দল। কদিন আগে ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ৮৭ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলটিই নিউজিল্যান্ডের শক্তিধর বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে বুকি চিতিয়ে লড়াই করল।
এটি সম্ভব হয়েছে নিজেদের ওপর বিশ্বাস ফেরাতেই। ইবাদত হোসেনও নিজের সামর্থ্যকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন। টেস্টে ঠিক জায়গায় বোলিং করতে পারেন না বলে যাঁর বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগ, সেই ইবাদতই কী অসাধারণ বোলিং করলেন। গতি, সুইং আর টানা নির্দিষ্ট জায়গায় বল ফেলে যাওয়ার পুরস্কারই পেয়েছেন। দলকেও জয় পেতে সহায়তা করেছেন। মাহমুদুল হাসানের মতো তরুণ কিউই বোলারদের দিকে না তাকিয়ে ধৈর্য নিয়ে খেলে গেলেন নিজের সামর্থ্যের ওপর ভরসা করেই। মুমিনুল–লিটনরাও সামর্থ্য দেখালেন। তাঁরা রান পেলেন, দলও পেল টেস্টে অসাধারণ এক জয়।