অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, যখন আমরা একটি ক্রান্তিকাল পার করছিলাম ঠিক সে মুহূর্তে আমরা বন্যার মুখোমুখি হলাম। আমাদের তথাকথিত বন্ধু রাষ্ট্রের হাইকমিশনার প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলেন, ডম্বুর বাঁধ ছাড়া হয়নি। তার উপর দিয়ে পানি উপচে পড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এর কারণ জানার চেষ্টা করবো। বন্যার্তদের পাশে আমরা আছি। তাদের সার্বিক বিষয় আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত আটটায় নোয়াখালীর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেক রক্ত, অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা, অনেক লড়াই আর অনেক শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। সেই নতুন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নিতে হবে। স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা আমাদের মাথায় ১৮ লাখ কোটি টাকা ঋনের বোঝা দিয়ে কয়েকশ লাখ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।
বন্যা নিয়ে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশে সৃষ্ট বন্যা সমস্যা ষড়যন্ত্র কি না তা আমরা তদন্ত করে দেখবো। আসলে ফ্যাসিস্ট সরকার গত ১৬ বছরে বাংলাদেশকে খুড়ে খুড়ে নষ্ট করেছে। রাষ্ট্রের সকল অঙ্গকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, অকার্যকর করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা সিস্টেম রিফর্মেশনের জন্য লড়াই করেছে, ক্ষমতার পালাবদলের জন্য নয়। ব্যক্তিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমরা বলছি সিস্টেমকে রিফর্মমেশন করবো। ঊর্ধ্বতনকে কাজ করতে না দেখলে নিচের কেউ কাজ করবে না। এটাই স্বাভাবিক। তাই উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সিস্টেম ঠিক করতে হবে। বর্তমান যে ক্রান্তিকালীন পরিস্থিতি সেটা যাওয়ার পর আমরা সিস্টেম রিফর্মেশনে হাত দিব।
তিনি বলেন, নোয়াখালী উপকূলীয় অঞ্চল। এখানকার মানুষ বন্যার সঙ্গে খুব একটা পরিচিত না। তবে উপকূলের প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়ে তারা সচেতন। তাই উদ্ধার কাজে সবার কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। আমরা চাই সবাই মিলে কাজ করবো। অন্যান্য জেলার মানুষ নোয়াখালীতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে এসেছে। আপনারা তাদের সহযোগিতা করবেন।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় সেনাবাহিনীর ১৬ পদাতিকের সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশরাফুল উদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানসহ জেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ, গণমাধ্যম কর্মী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বেগমগঞ্জের টেকনিক্যাল স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় আশ্রয় নেওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের খোঁজ খবর নেন এবং তাদের পুনর্বাসন ও সরকারি সহায়তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।