বাংলাদেশি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন কানাডায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হলেন
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন কানাডার লেকহেড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মান। চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জিলিয়ান সিডাল সিনেট সভায় অধ্যাপক নাসিরের হাতে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের সম্মাননা ও সনদপত্র প্রদান করবেন। এ ছাড়া আগামী বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে সম্মান জানানো হবে।
অধ্যাপক নাসির উদ্দিন তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হওয়ার জন্য একজন শিক্ষককে দীর্ঘ সময় শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা, নেতৃত্বদানসহ অভিনব পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করা হয়। শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে তিনি সর্বসাধারণের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন।
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন ইতোপূর্বে তড়িৎ কৌশল বিভাগের ফেলো হিসেবে সম্মান অর্জন করেন। ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) তাঁকে ফেলো মনোনীত করে। কারিগরি ও পেশাজীবীদের সংগঠন আইইইই থেকে তাকে এই সম্মাননা ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। বৈদ্যুতিক মোটরের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ ও অবচয় রোধের কৌশল আবিষ্কারের জন্য তিনি ওই সম্মানে ভূষিত হন।
অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এটি আমার তথা বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল সম্মান। এতে আমি অভিভূত। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সম্মান অর্জন করা খুব কষ্টসাধ্য বিষয়। তবে আমি সফল হতে পেরেছি। আমার সহকর্মী ও পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দেশবাসীর কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি, আমি যেন আমার সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারি।’
নাসির উদ্দিনের বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি গ্রামে। বাবা আরশেদ আলী মন্ডল। চার বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে নাসির দ্বিতীয়। স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে নিয়ে তিনি কানাডার অন্টারিওর ব্যারি শহরে থাকেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছোটবেলা থেকে নাসির অত্যন্ত মেধাবী। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি প্রথম বিভাগে পাস করেন। পরে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ কৌশল বিভাগে। সেখান থেকে ১৯৯৩ সালে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। পরে বুয়েটে তড়িৎ কৌশল বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। কমনওয়েলথের বৃত্তি পেয়ে নাসির কানাডা যান। কানাডার মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০০ সালে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১০ সালে তিনি লেকহেড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা গবেষকের স্বীকৃতি অর্জন করেন। একই বছর বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘মোটর মাস্টার’ উপাধিতে ভূষিত করে। বিশ্বের বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।