বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মির্জা আজম হলে র্যাগিয়ের শিকার হয়েছে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ (ডাকনাম ফাহাদ) নামের এক শিক্ষার্থী।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২ টা ২০ মিনিটে। ঘটনার সূত্রপাত রাত ১১.৩০ টার দিকে ৩য় ব্যাচ এবং ৪র্থ ব্যাচের মিটিং এর মধ্য দিয়ে। মিটিংয়ে ভিক্টিম কে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গালাগালি করা হয় বলে জানা যায়।
এই বিষয়ে ভিক্টিম আব্দুল আহাদ (ফাহাদ) বলেন- “আমি রাত ১১টার দিকে নামাজ পরে আসি রাত ১১.৪০ দিকে ৩য় ব্যাচের সিনিয়র বড় ভাইরা আমাকে ডেকে নিয়ে যায় এবং আমাকে গালাগালি করা শুরু করেন। এই সময় আমি বলি আমরা ৪র্থ ব্যাচ কিন্তু বিপ্লবী হয়ে উঠবো। এই কথা শুনে সৈকত ভাই আমার উপর প্রচুর রাগান্বিত হয়ে গালাগালি শুরু করেন। তারপর আমি মাফ চেয়ে রুমে চলে আসি এবং আমি ঘুমিয়ে পড়ি। তারপর রাত ২ টায় সৈকত ভাই আর নাম না জানা একজন ডেকে নিয়ে যায়। এই সময় আমাকে ২০-২২ জন মানসিকভাবে অনেক নির্যাতন করেন। তারা গালি-গালাজ, হুমকি-ধামকি, এবং জীবন-নাশের ভয় দেখান। এভাবে এক সময় আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।”
“তাদের মধ্যে ছিলো গনিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অপি, বেলায়েত হোসাইন, আলামিন, সিফাত, সিএসই চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুর রহমান আদর, সিএসই ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মারুফ মোর্শেদ(২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষ)। গনিত বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াজ, সমাজকর্ম চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আমজাদ, ইকরাম, সমাজকর্ম ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সৈকত এবং নাম না জানা আরোও কয়েকজন। এদের মানসিক নির্যাতন এভাবে চলতে চলতে এক সময় আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তারপর আমার সহপাঠীরা আমাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভিক্টিমের রুমমেট জানান- ” মির্জা আজম হলের ৩০৯ নম্বর রুম থেকে সিএসই ২য় বর্ষের ফাহাদ কে সমাজকর্ম বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সৈকত ১০৫ নম্বর রুমে (গেস্ট রুম) ডেকে নিয়ে যায়। প্রায় ২ ঘন্টা পর তারা ফাহাদ কে নিজ রুমে অজ্ঞান অবস্থায় রেখে চলে যায়।”
অভিযুক্ত সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুর রহমান আদর জানান, “আমরা হলের সিনিয়র জুনিয়র একটা পরিবার। আমরা পরিবারের বিষয়গুলো বাহিরে আনতে চাচ্ছি না। আমরা নিজেরাই ডেকেছিলাম অজ্ঞান হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন ভোর ৫ টার সময় ১০৫ নম্বর রুমে অজ্ঞান হয়ে গেলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মেহরাব হোসাইন অপি বলেন, “এখানে র্যাগিং এর দাবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। আমরা সিনিয়র জুনিয়র একসাথে থাকি বিভিন্ন কারণে মনমালিন্য হতে পারে এমন একটা বিষয়ে আমরা সিনিয়র জুনিয়র মতবিনিময় করেছিলাম। সেদিন রাতে না ঘুমানোর কারণে অজ্ঞান হয়ে যায়। তারপর আমরা তাঁর মুখে পানি দিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করি।”
সহকারী প্রক্টর(চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত) ড. আব্দুস ছাত্তার বলেছেন “যেহেতু এটা র্যাগিং এবং বুলিং এর বিষয়, তাই আমি তাদের কে তাদের এবং বুলিং কমিটি বরাবর অভিযোগ করতে বলেছি।”