ববি প্রতিনিধি: বাস চাপায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিমের নিহতের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার, নিহত পরিবারকে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণসহ নানা দাবি করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। এই রিপোর্ট লেখা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিলেন।
বেলা সাড়ে বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়কে নিহত মিমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় নিহত ছাত্রীর বাবা-মামাসহ পরিবারের লোকজন অংশগ্রহণ করেন। নিহত ছাত্রী মিমের বাড়ি নেত্রকোনায় তার পিতার নাম মোহাম্মদ আলী। তিনি বড় হয়েছেন ঢাকায় মায়ের সাথে মামাদের তত্ত্বাবধানে। মিমের পিতা সবার কাছে তার সন্তানের আত্নার মাগফিরাত কামনা করেন এবং এই হত্যার বিচার দাবি করেন।
জানাজা শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ঢাকায় পারিবারিকভাবে মামাদের তত্ত্বাবধানে জানাজা শেষে লাশ কবর দেওয়া হবে। মাইশা ফৌজিয়া মিম পিতা-মাতার একমাত্র সন্তান। নিহত ছাত্রীর মা আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার সন্তানের হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।
এরপর বেলা দেড়টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে উপাচার্যের সাথে কথা বলে এসময় তারা ববির সামনের মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ, নিহত মিমের পরিবারকে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বুধবার রাত নয় টার দিকে মিম ববির ভোলা রোড সংলগ্ন মহাসড়ক পার হওয়ার সময় নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস নামের বাস চাপায় ঘটনাস্থলে মারা যান। ঘটনার পরপরই ঘাতক বাসটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ববি শিক্ষার্থীরা।
এরপর থেকে রাত ২ পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। তখন চালক-হেলপারকে গ্রেফতারে প্রশাসনকে ৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক ছেড়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
এবিষয়ে ভূমিকা সরকার নামে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, নিহত মিম ববির পরিসংখ্যান বিভাগের ১২তম ব্যাচের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। রাস্তা পার হওয়ার সময় মিমকে চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারসহ জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, সড়কে স্পীড ব্রেকার স্থাপন ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। নয়তো আমাদের আন্দোলন চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.রাহাত হোসেন ফয়সাল বলেন, আমরা কালকে রাত থেকে কাজ করতেছি। সকল দাবিগুলো আমরা অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো। ক্ষতিপূরণের বিষয়টা নিয়ে আমরা বাস মালিক ও সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলব।
এ সময় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো শওকত আলী বলেন, আমরা তোমাদের সকল দাবি দাওয়া শুনেছি। আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি। সড়কে স্প্রিড ব্রেকার বসানোর কাজ চলছে। ট্রাফিক পুলিশ থাকবে। সড়কে ফুটপাতের যে দাবি করেছো তা একটু দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কিন্তু আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করতে।
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিআরটিএর সাথে কথা বলেছি। তারা পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিবে। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলছি। যতদ্রুত সম্ভব আমরা ওই খুনি বাসক চালককে গ্রেপ্তারের জন্য কথা বলেছি। বাস মালিককে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসব।