জাবি প্রতিনিধিঃ গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লা খান বলেছেন, অনেকে বলে বঙ্গবন্ধু হত্যায় কোন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল না। তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু খুনি রশিদের স্ত্রী জোবাইদা ও ফারুকের স্ত্রী ফরিদা ছিলেন পরস্পর বোন। তাদের পিতা এস এইচ খানের বড় ভাই এম এ খান পাকিস্তানের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন। তাদের পরিবার মুসলিম লীগ পরিবার। সেই জোবাইদা রশিদ বলেছেন, ফারুক আমাদের বাড়িতে এসে বলে সরকার পরিবর্তন হলে জিয়া প্রেসিডেন্ট হতে চায়। তখন জিয়া ফারুককে বলেছেন, শেখ মুজিবকে জীবিত রেখে সরকার পরিবর্তন করা যাবে না। এটা সফল হলে আমার কাছে এসো। বিফল হলে এসো না। এরপরও কি বিএনপি বলবে আমরা জড়িত না?
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু: অফুরন্ত আলোর উত্থান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে এ আলোচনার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি বলে থাকে বঙ্গবন্ধু হত্যার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছে খন্দকার মোশতাক। লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আবদুল হামিদ আর জিয়া একই সাথে জয়েন করেছেন। “তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা” বইয়ে তিনি লিখেছেন, ১৪ আগস্ট বিকেলে সেনাবাহিনীর টেনিস কোর্টে আমি, জিয়া আর খোরশেদ খেলছিলাম। আশেপাশে দেখলাম মেজর নূরসহ জুনিয়র অফিসাররা ঘুরাঘুরি করছে। আমি আগস্টের প্রথম থেকেই নুর,ফারুক, রশিদকে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছি। তারা বলেছে সেনাবাহিনীর উপপ্রধানের অনুমতি নিয়ে এখানে এসেছি। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত তাদের ক্যান্টনমেন্টে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন জিয়া।
লন্ডন টেলিভিশনে রশিদ, ফারুক একটি সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। সেখানে তারা বলেছে, ১৯৭৫ এর ২০ মার্চ আমরা জিয়ার সাথে দেখা করি, উৎখাতের কথা বলি। জিয়া তখন বলেছেন, আমি সিনিয়র অফিসার, আমাকে এখানে ইনভলভ করো না। সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে তার দায়িত্ব ছিল নিষেধ করা বা সরকারকে জানানো। তিনি তার কোনটাই না করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে ২২ তারিখেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ করা হয়। জিয়া তখন চীফ মার্শাল ল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। পরে পঞ্চম সংশোধনীতে এটাকে আইনে পরিণত করা হয়েছে। এর দায় বিএনপি এড়াতে পারে না। অবিলম্বে একটা কমিশন গঠন করে নেপথ্যে যারা ছিল তাদের বিচার করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ এ মামুনের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রো—উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, প্রো—উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির প্রমুখ।