আকিফা চৌধুরী, নিটারঃ সাভারে অবস্থিত জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (নিটার) এ ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমন্ট কর্তৃক এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড প্রসপেক্ট অফ ফ্যাশন ডিজাইন স্টাডি ইন বাংলাদেশ এই বিষয় নিয়ে সেমিনার।
সোমবার সকলে নিটার কনফারেন্স রুমে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়। সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অফ ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি এর সহযোগী অধ্যাপক, এন. কে কায়কোবাদ রানা, ডিপার্টমেন্ট অফ ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি। আরো উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি এর সহকারী অধ্যাপক এম.এস শর্মিলী সরকার, ডিপার্টমেন্ট অফ ফ্যাশন স্টাডিজ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর মহোদয় ড. মোহাম্মদ জোনায়েবুর রশীদ। সেমিনারটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর প্রভাষক ইয়াসমিন আক্তার তুলি। আরো উপস্থিত ছিলেন ডিপার্টমেন্ট এর সহকারী অধ্যাপক এবং ডিপার্টমেন্ট হেড ইসমাত জেরিন এবং ডিপার্টমেন্ট এর সম্মানিত শিক্ষক মহোদয়।
সেমিনার এর শুরু হয় সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে যেখানে তিনি কলাবরেশন এর মাধ্যমে শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন এন. কে কায়কোবাদ রানা। তিনি তার বক্তব্য শুরু করেন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফ্যাশন ডিজাইন সাবজেক্ট এর প্রতিবন্ধকতা নিয়ে। তিনি বলেন “এইসব প্রতিবন্ধকতা শুরুতেও ছিলো এখন ও আছে কিন্তু আমরা সেগুলো কে ওভারকাম করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যেভাবে আমরা ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। আমরা এই পৃথিবীর মধ্যে বর্তমানে মেইড ইন বাংলাদেশ ট্যাগ লাইন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। যা জাতি হিসেবে অত্যন্ত গর্বের বিষয়।”
এছাড়া তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থায় অবি (OBE) কারিকুলাম নিয়ে আলোকপাত করেন এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। এছাড়াও ফ্যাশন ডিজাইনিং এ পড়লে কোন কোন ক্ষেত্রে কি কি সুযোগ সুবিধা থাকবে সেগুলো নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। ফ্যাশন ডিজাইনিং এর স্টুডেন্টদের কোন কোন বিষয়ে স্কিল অর্জন করতে হবে সেগুলো নিয়ে কথা বলেন।
তিনি ধারণা দেন ফ্যাশন ডিজাইনার দের জব সেক্টর নিয়ে। তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন বাংলাদেশের আরএমজি সেক্টর এর শুরু, ইতিহাস এবং বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে এর অবস্থান নিয়ে।
এরপর বক্তব্য রাখেন এম.এস শর্মিলী সরকার , তিনি বক্তব্যের শুরুতেই তার শিক্ষা দানের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন এরপর বলেন ইন্ডাস্ট্রি এর সাথে এডুকেশনাল ইনিস্টিটিউট গুলোর কলাবরেশন এর কথা। যাতে স্টুডেন্টরা সহজে ইন্ডাস্ট্রি তে কিভাবে ডিজাইন থেকে শুরু করে প্রোডাকশন হয় সেইসব বিষয়ে হাতে কলমে ধারণা পেতে পারে এবং সেই অনুযায়ী নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে।
এছাড়াও তিনি ফ্যাশন ডিজাইন এর স্টুডেন্ট দের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের কম্পিটিশন এ অংশগ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করেন যাতে তারা তাদের অবস্থান বিশ্বে তুলে ধরতে পারে এবং সর্বোপরি বাংলাদেশ কে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে বিশ্বের দরবারে। তিনি স্টুডেন্ট দের ফ্যাশন সেন্স বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলেন, WGSN এর মাধ্যমে যেন সবসময়ই Trend নিয়ে স্টুডেন্টরা আপডেট থাকে সেই দিকে নজর দিতে বলেন এবং ল্যাঙ্গুয়েজ বেজড কমিউনিকেশন স্কিল ডেভেলমেন্ট এর ব্যাপারে জোর দেওয়ার কথাও বলেছেন তার বক্তব্যে।
সেমিনার এর শেষ পর্যায়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব রাখা হয় এবং অতিথিরা স্টুডেন্ট দের প্রশ্নের উত্তর বুঝিয়ে দেন। এরপর গত ১৯/৮/২০২৩ইং নিটার ফ্যাশন ক্লাব কর্তৃক অনুষ্ঠিত হওয়া ফ্যাশনইস্তা কম্পিটিশন এর বিভিন্ন সেগমেন্ট এ পুরস্কার প্রাপ্ত স্টুডেন্ট দের পুরস্কার এবং প্রাইজ মানি বিতরণ করার মাধ্যমে সেমিনার শেষ হয়।