The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ফেনীতে খালের বাঁধ কাটতে এসে বিজিবির বাধায় পিছু হটল বিএসএফ

ফেনীর পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নের নিজ কালিকাপুর সীমান্তের শূন্যরেখায় বল্লামুখার বাঁধ কেটে দেওয়ার চেষ্টা করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বিজিবি ও স্থানীয়দের বাধার মুখে তাদের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ সময় বিএসএফের সদস্যরা পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে সেখান থেকে সরে যান বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়নের (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের চাপে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিলোনিয়া শহর প্লাবিত হয়। পরে বল্লামুখা খালের মুখে ভারতীয় অংশে বিএসএফ সদস্যদের সহযোগিতায় বাঁধ কেটে দেয় ভারতীয়রা। এতে সিলোনিয়া নদীর পানি বেড়ে বহু গ্রাম প্লাবিত হয়। একপর্যায়ে তারা বাংলাদেশ অংশে বাঁধটিও কেটে দেওয়ার জোর চেষ্টা চালায়। তবে বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে তা ব্যর্থ হয়। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ও নেটওয়ার্ক না থাকায় বিষয়টি এতদিন জানাজানি না হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

এ ব্যাপারে মো. মোস্তফা, দেলোয়ার হোসেন, মো. ইসমাইল হোসেনসহ একাধিক স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা বলেন, গত ২০ আগস্ট সকালে বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করে বল্লামুখার খালের বাঁধের ব্যাপারে গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। ওইদিন রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশ অংশের বাঁধ কাটতে চেষ্টা করে বিএসএফ। তাদের সহযোগিতায় ভারতীয় নাগরিকরাও এগিয়ে আসেন। বাঁধে অবস্থান নেওয়া বাংলাদেশি বাসিন্দাদের ছত্রভঙ্গ করতে বিএসএফ পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন। পরে গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে নিজ কালিকাপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। তাদের বাধার মুখে খালের বাঁধটি কাটতে পারেনি ভারতীয়রা। এতে বন্যায় আরও বেশি দুর্ভোগের হাত রক্ষা পেয়েছে মির্জানগর ইউনিয়নসহ পরশুরামের নিম্নাঞ্চল।

ইউনুছ মিয়া নামে বয়োবৃদ্ধ আরেক বাসিন্দা বলেন, বাঁধটি কেটে দেওয়া হলে মির্জানগর ইউনিয়নসহ পরশুরামে আরও বেশি পানি প্রবেশ করত। ১৯৮৩ সালের বন্যার সময়ও এ বাঁধটি কেটে দেওয়ায় পরশুরামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।

নিজ কালিকাপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক রুম্মান শরীফ বলেন, বাঁধটি যেন কোনোভাবে কাটতে না পারে সেজন্য আমরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে সেদিন বাঁধের ওপরে অবস্থান নিয়েছিলাম।

বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, ওই এলাকায় সীমান্তের শূন্যরেখায় ভারতের অংশে বাঁধ কাটার চেষ্টা করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা এতে বাধা দেন। পরে বিজিবি সদস্যরা গেলে তারা সরে যান।

প্রসঙ্গত, উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজ কালিকাপুরে ভারত সীমান্তে মুহুরী নদী-সংলগ্ন চরের পশ্চিমে-দক্ষিণে রয়েছে একটি মরা নদী। সেটি বল্লামুখার খাল নামে পরিচিত। বল্লামুখার খাল নিজ কালিকাপুর থেকে শুরু হয়ে রাঙ্গামাটিয়া, ফকিরের খিল, উত্তর কাউতলী, বাইন্যা গ্রাম, ডিএম সাহেবনগর, মেলাঘর, মির্জানগর, গদানগর, পূর্ব সাহেবনগর, কালীকৃষ্ণনগর গ্রাম দিয়ে সিলোনিয়া নদীতে মিলিত হয়েছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.