ইবি প্রতিনিধি: ৪৪তম দিবসেও পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হয়নি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। অথচ শতভাগ আবাসিকতার প্রস্তাবনা নিয়ে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক ব্যবস্থা ২০ শতাংশেরও কম। বাকী ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের পাশ্ববর্তী বিভিন্ন মেস ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহরে মেস এবং ভাড়া বাসায় অবস্থান করতে হচ্ছে। তবে আবাসিকতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, ‘ উন্নয়নমূলক কাজগুলো দ্রুতগতিতে বাস্তবায়ন চাই আমরা। এতে কিছুটা আবাসন সুবিধা নিশ্চিত হবে আমাদের। একইসাথে আর্থিকভাবে আমরা উপকৃত হবো।’
সূত্রমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৯ জন। পক্ষান্তরে শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য হল রয়েছে ৮টি। তন্মধ্যে ছাত্রদের হল রয়েছে পাঁচটি এবং ছাত্রীদের হল রয়েছে তিনটি। শিক্ষার্থীদের জন্য সব হল মিলে ৩ হাজার ৩৫৫ জন শিক্ষার্থীর আবাসনের সুবিধে রয়েছে। যা মোট শিক্ষার্থীর ২০ শতাংশও নয়।
ফলে শিক্ষার্থীদের থাকতে হচ্ছে ২২ ও ২৪ কিলোমিটার দূরে (যথাক্রমে) ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া শহরে। অথবা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শেখপাড়া, গাড়াগঞ্জ, হরিনারায়নপুর, ত্রিবেনি, মধুপুর, আলমডাঙ্গাসহ সহ বিভিন্ন জায়গার মেসে। উপায়ন্তর না পেয়ে কেউবা থাকে হলগুলোর গণরুমে গাদাগাদি করে। এজন্য শহরে থাকা শিক্ষার্থীদের দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করতে হয়। এর ফলে চরম ক্লান্তি, পড়াশোনা সমস্যা , যাতায়াতে পর্যাপ্ত পরিবহন পুলের ব্যবস্থা না থাকা, গাদাগাদি করে যাতায়াত করা, নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ ইত্যাদি সমস্যার কথা জানায় শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের হলগুলোতে আবাসন সুবিধা পেতে ২-৩ বছর অপেক্ষা করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শেষ হয়ে গেলেও তাদের ভাগ্যে মেলেনা হলের আবাসন সুবিধা। এছাড়াও হলে আবাসিকতা মিললেও ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের প্রভাবে হলে না উঠতে পারার অভিযোগ রয়েছে।
ইবি শিক্ষার্থী ইব্রাহিম আলী রনি বলেন, আবাসন সংকটের কারণে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পকেট গেট সংলগ্ন এক মেসে থাকি। আবাসনের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা থাকলে আমি হলে থাকতাম। কিন্তু আবাসন সমস্যার কারণে হলে থাকার কথা চিন্তাও করিনা। তাছাড়া থাকতে হলেও প্রথমত গণরুমে গাদাগাদি করে থাকতে হবে। এভাবে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব না।
এছাড়া ছাত্র ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আজিজুল হক পিয়াস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবে আজও ২০ শতাংশ আবিসকতা নিশ্চিত করতে পারেনি শতভাগ তো কল্পনাতীত ব্যাপার। এছাড়া মেগা প্রকল্পের অধীনে থাকা হলগুলোর কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। যার ফলো শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
এ বিষয়ে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আবাসিক সমস্যা নিরসনের জন্য আমাদের মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এই মেগা প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে ৪০-৫০ শতাংশ আবাসিক সমস্যা দূর হবে। এছাড়া নতুন নতুন প্রজেক্ট গ্রহণ করা হচ্ছে আবাসিক সমস্যা দূর করার জন্য। ধীরে ধীরে এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আশা করছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, পুরাতন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের অনেক সংকট রয়েছে। এগুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। ধীরে ধীরে আমরা এই সংকটগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। আশা করছি আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির ৪৩ পেরিয়ে ৪৪ এ পা রাখল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়