রমজান মাসের ছুটি পুর্নবহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। প্রাথমিকের শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি থেকে এ দাবি জানানো হয়। গতকাল সংগঠনটির একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, শীঘ্রই ছুটির বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর তারা আবেদন করা হবে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রত্যেক জেলা কমিটি নিজ নিজ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রত্যেক উপজেলা কমিটি নিজ নিজ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন জমা দেবেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে রমজান মাসে কখনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চালু ছিলো না। মাঝে একবার রমজানে দুই থেকে তিনদিন ক্লাস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেটি পুনরায় বন্ধ করা হয়। তিনি বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষকরা অন্যান্যা সরকারি চাকুরিজীবীদের থেকে কম ছুটি ভোগ করেন। অন্যদের সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে দুইদিন। সেখানে আমরা শুধু শুক্রবার ছুটি পেয়ে থাকি। এছাড়া জাতীয় দিবসগুলোতেও আমাদের বিদ্যালয়ে আসতে হয়।
তিনি আরও বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সারাদিনে হয়তো একটি ক্লাস নেন। কিন্তু আমাদের একজন শিক্ষককে সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অনেকগুলো ক্লাস নিতে হয়। শিক্ষার্থীদের বারবার বুঝাতে হয়। সারাদিন কথা বলতে হয়। অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন দুই থেকে তিনজন। তাহলে তারা কিভাবে রমজান মাসে ক্লাস নেবেন?
শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, দীর্ঘদিন প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি বন্ধ রয়েছে। যে কারণে অনেক শিক্ষককে নিজের বাড়ি থেকে অনেক দূরে গিয়ে ক্লাস নিতে হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে সেটি ২০/২৫ কিলোমিটার দূরত্বেরও হয়ে যায়। রমজান মাসে এই গরমের মধ্যে একজন শিক্ষকের পক্ষে এভাবে ক্লাস চালিয়ে নেয়া অসম্ভব। শিখন ঘাটতি পূরণের জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হলেও এটি কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটি নিয়ে আমরা সন্দিহান। তিনি ছুটি পুর্নবহাল রাখার দাবি জানিয়ে বলেন, প্রয়োজনে রমজান মাসের পরে আমরা সমন্বয় করে নেবো।
উল্লেখ্য, মন্ত্রণালয় থেকে করোনাকালীন শিখন ঘাটতি পূরণের জন্য ২০ রমজান পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।