ইবি প্রতিনিধি : দূর্ঘটনায় পা ভাঙলেও দমে যায়নি মাইসুরা রহমান নামের এক ভর্তি পরীক্ষার্থী। ভাঙা পা নিয়েই এসেছেন নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে। শনিবার (২৭ মে) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সি ইউনিটের বাণিজ্য বিভাগের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন মাইসুরা রহমান। অসুস্থতা যে স্বপ্ন পূরণে কোনো বাঁধা নয় তারই উদাহরণ হয়ে রইলেন এই পরীক্ষার্থী। ভাঙা পা নিয়ে চেয়ারে বসতে না পারলেও মেঝেতে বসেই পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন তিনি।
এদিন বেলা ১২টা থেকে সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে ১টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদ ভবন কেন্দ্রের নিচতলার ১০৫ নং কক্ষে ঐ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেন কর্তৃপক্ষ। এর আগে ১১ টার দিকে ভর্তি পরীক্ষায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক ও বিএনসিসির সহয়তায় মা বাবার কোলে উঠে নিজের হলে প্রবেশ করেন মাইসুরা।
জানা যায়, গত ৫ মে রাজশাহীতে ভর্তি কোচিং করে ফেরার পথে রিকশা উল্টে যাওয়ার কারণে পা ভেঙে যায় মাইসুরার। ভাঙা পা নিয়েই এর আগে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে।
মাইসুরা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী। তার স্বপ্ন ম্যানেজমেন্ট বিভাগে পড়াশোনা করার। তাই শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও নিজের স্বপ্ন পূরণে লড়াই করছেন তিনি।
পরীক্ষা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা ভালো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকরা অনেক সাহায্য করেছে। যদি চান্স হয় তাহলে ইবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগে পড়াশোনা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমার সাথে আমার মা-বাবা এসেছেন। তারা আমার জন্য সব সময় লড়াই করে যাচ্ছেন। আমার পাশে তারা আছেন বলেই ভরসা পাচ্ছি। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। তাদের এই কষ্ট সার্থক হবে যদি আমি এই ভর্তিযুদ্ধে সফল হতে পারি।
এ বিষয়ে মাইসুরার বাবা মোখলেছুর রহমান বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কাছ থেকে যথেষ্ট আন্তরিকতা পেয়েছি। তারা আমার মেয়ের পরীক্ষার জন্য সব রকম সাহায্য করেছেন। আমার মেয়ে যেহেতু পা নিয়ে সিটে বসে পরীক্ষা দিতে পারবে না তার জন্য শিক্ষকরা বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে ইবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, মেয়েটি যেহেতু পা নিয়ে চেয়ারে বসতে পারে না তাই তার পরিক্ষার্থীর সুবিধার্থে নিচে বসে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। উপাচার্য স্যারকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টির ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।