পাবিপ্রবি সংবাদদাতাঃ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা তীব্র সেশনজটে ভুগছেন। এই বিভাগের একটি ব্যাচ ৯ বছর শেষ করে ফেললেও এখনো অনার্স শেষ করতে পারেনি। ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১১ মাসে ও ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি বিভাগটি। এতে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৪ সালে পাঁচ বছর মেয়াদি অনার্স (বিএসসি) কোর্সের মাধ্যমে স্থাপত্য বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। এরপর এই বিভাগ থেকে দুটি ব্যাচ বের হয়, যাদের অনার্স শেষ করতে প্রায় ৮ বছর করে সময় লেগেছে। এই বিভাগের ৩য় ব্যাচ (২০১৫-১৬ সেশন) ২০১৬ সালে অনার্সের ক্লাস শুরু করলেও এখনো বের হতে পারেনি। ১১ মাস আগে অনার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হলেও এখনো তাদের ফলাফল হয়নি। হিসাব অনুযায়ী ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ সেশনের অনার্স শেষ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এই ব্যাচগুলোরও অনার্স শেষ হয়নি। এই ব্যাচগুলোতে প্রায় আড়াই থেকে তিন বছরের সেশনজট আছে। এর নিচের আরও ৫টি ব্যাচেও সেশনজট বিদ্যমান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ২০২৩ এর মে মাসের ২৯ তারিখ লিখিত পরীক্ষা ও নভেম্বর ২১ তারিখে ভাইবা শেষ হয়। ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে পারেননি বিভাগটি। একই সাথে ভর্তি হওয়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা কেউ দুই বছর আগে কেউ আড়াই দুই বছর আগে অনার্স শেষ করে চাকুরি করছেন অথচ তারা এখনো রেজাল্টের জন্য আটকে আছেন। অনার্স শেষ করতে পারেনি। এর ফলে তারা চাকুরির আবেদন, উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পড়তে যাওয়ার আবেদনগুলো করতে পারছেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই বিভাগে জটিলতা, বিভক্তি অনেক। সবগুলো ব্যাচেই কম বেশি সেশনজট আছে। তবে এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে শিক্ষকদের রোষানলে পড়তে হয়। সে কারণে বিভাগের অনিয়ম নিয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পায়না কারণ ব্যবহারিকের সব নাম্বার শিক্ষকদের হাতেই থাকে।’
অন্যদিকে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের সাথে ভর্তি হওয়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ইতোমধ্যে তাদের অনার্স শেষ করেছে কিন্তু তারা ৫ম বর্ষের ১ম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ করেছেন মার্চ মাসে। ২য় সেমিস্টারের পরীক্ষা, ভাইবা, জুরি শেষ হতে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস লাগতে পারে, এরপর ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ফলে তাদের অনার্স শেষ করতেও ৮ বছরের বেশি সময় লেগে যাবে।
বিভাগের চেয়ারম্যান বিজয় দাশ গুপ্ত সেশনজট সমস্যার জন্য করোনা, শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট ও স্টুডিও সংকটকে দায়ী করছেন। এসময় তিনি রেজাল্ট
প্রকাশে দেরি হওয়া নিয়ে বলেন, ৮ ব্যচের কিছু শিক্ষার্থীর রিটেক ছিলো। রিটেক থাকার কারনে পূর্বের সেমিস্টারের কিছু খাতা কন্ট্রোলারের কাছে আটকানো ছিলো। ওই রেজাল্টগুলো ছাড়া আমরা ফলাফল প্রকাশ করতে পারবো না। তাছাড়া ওদের থিসিসটা সময় মতো নিতে পারি নি ,দেরি হয়ে গেছে। খাতা ইতিমধ্যে হাতে পেয়েছি। আমি ছুটিতে আছি। ছুটি থেকে গিয়ে ওই খাতা গুলো মূল্যায়ন করতে পারবো। ক্যাম্পাসে ফিরে ফলাফল প্রকাশ করতে পারবো।
এমরান হোসেন তানিম/