পাবিপ্রবি প্রতিনিধি: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাম শারভীন সুলতানা মীম (২৬) সোমবার (২৫ মার্চ) পাবনা শহরের মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন। সংবাদ শুনে ছড়িয়ে যাওয়ার পর থেকে ছুটে আসেন তাঁর বান্ধবীরা। এরপর থেকেই শুরু হয় সহপাঠীদের কান্না আর আর্তনাদ। তারা মীমের এই মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেননা।
মীমের বান্ধবী সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী ছন্দা বলেন, ‘ওর সাথে আমি স্কুল, কলেজে পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়েও এক সাথে চান্স পেয়েছি। খুব শক্ত মেয়ে ছিলো। ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভীষন্নতার মধ্যে ছিল সেটা জানতাম কিন্তু এই ঘটনা যে ঘটাবে সেটা আমাদের মোটেও বিশ্বাস হচ্ছেনা। ও এভাবে আমাদের না জানিয়ে চলে যাবে এটা প্রত্যাশিত ছিল না।’
রুমি নামের আরেক বান্ধবী বলেন, ‘ও খুব হাসি খুশি আর চঞ্চল মেয়ে ছিলো। দুইদিন আগেও ওর সাথে আমার দেখা হয়েছে কিন্তু বাইরে থেকে বুঝতে পারিনি। ও যে এমন ঘটনা ঘটাবে আমরা চিন্তাও করতে পারিনি। আত্মহত্যা মুক্তির কোন পথ হতে পারেনা, আমরা আর কাউকে হারাতে চাইনা।’
মীমের আত্মহত্যার কথা শুনে সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে মেহেরপুর থেকে পাবনায় ছুটে আসেন মীমের বাবা ও মা। পাবনা সদর থানায় এসেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা মা। তাঁর বাবা আজিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘সে শিক্ষিত মেয়ে। জামাইয়ের সাথে ঝামেলা হোক বা আমাদের সাথেই ঝামেলা হোক সেটা আমাদের সাথে কিংবা ওর বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারতো। কিন্তু সে এটা না করে আত্মহত্যার পথ কেন বেছে নিয়েছে সেটাই আমি বলতে পারছিনা। সে সচেতন মানুষ। সে আত্মহত্যা করবে এটা আমি মেনে নিতে পারছিনা, এটাই আমার কষ্টের। এত নিকৃষ্ট কাজ সে কেন করতে গেলো! কষ্ট হয়তো আমার আমি ওকে মানুষ করতে পারিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘গতকাল ভোরে ওর সাথে আমার কথা হয়। সে আমাকে কোন সমস্যার কথা বলেনি। চার মাস হয়েছে বিয়ে হয়েছে কিন্তু ও কোন সমস্যার কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেনি। জামাই কোন ঝামেলা করেনি। জামাইয়ের প্রতি আমাদের কোন অভিযোগ নেই’।
কান্না গলায় তাঁর মা বলেন, ‘আমি জানি সে হলে আছে, সে পড়াশোনা করছে। সকালে শুনি সে আর দুনিয়াতে নাই। ওর আর ওর স্বামীর মধ্যে কিছু হয়েছে কিনা সেটাও আমাকে বলেনি। যদি ওর কিছু হয়ে থাকে তাহলে সে মা হিসেবে আমাকে বলতে পারতো কিন্তু বলেনি।’