করোনাভাইরাস মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট বেড়েছে। এতে শেষ পেরেক ঠুকেছে ভয়াবহ বন্যা। পাকিস্তানে খাদ্যপণ্যের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। টমেটো, আলু, পেঁয়াজের মতো জিনিসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।
বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০টি এলাকাকে দুর্যোগ-কবলিত হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় সেই তালিকায় দেশটির আরও আটটি জেলা যুক্ত হয়েছে।
বন্যায় বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের ইন্দুস নদীর পশ্চিম তীরের কাছের শহর দাদুতে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। চাল ও পেঁয়াজ উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দাদু। আশ্রয় শিবিরের বাসিন্দা আলী আসগর লোনদার বলেন, বন্যার আগে সেখানে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৫০ রুপি। এখন সেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।
শুধু পেঁয়াজই নয়, দেশটিতে আলু, টমেটো, ঘি’র দামও আকাশচুম্বী হয়েছে। লোনদার বলেছেন, আলুর দাম চার গুণ বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি কেজি ১০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর দাম বেড়েছে ৩০০ শতাংশের বেশি। দেশটির বাজারে এখন প্রতি কেজি টমেটোর দাম ৪০০ রুপি। এছাড়া ঘিয়ের দামও বেড়েছে ৪০০ শতাংশের বেশি। খাদ্যসামগ্রী মজুতের গুদাম প্লাবিত হওয়ায় দুধ ও মাংসের সরবরাহও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিন্ধু নদীর পশ্চিম তীরের কাছে অবস্থিত শহর দাদুতে তাঁবুতে বসবাসকারী হাজার হাজার লোকের মধ্যে একজন আলী আসগর লন্ডার। তিনি বলেন, বন্যার আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৫০ রুপি। এখন তা কিনতে হচ্ছে ৩০০ রুপিতে। তিনি দেশে চাল ও পেঁয়াজ ক্ষেতের বেশি ক্ষতি দেখছেন।
দেশটির অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল অবশ্য বলেছেন যে, সবজির দাম কমে আসছে।
পাকিস্তানে ৪৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুদ্রাস্ফীতিতে পড়েছে। জেএস গ্লোবাল ক্যাপিটাল লিমিটেডের গবেষণা প্রধান আমরিন সুরানি বলেন, ‘বন্যার প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো মুদ্রাস্ফীতির উপর প্রভাব। একটি উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পরিবেশ, পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।’