The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

পর্যটক এক্সপ্রেস নিয়ে কক্সবাজার এর মানুষের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ও ভাবনা

মো: আবদুল আল মামুনঃ 

ঝক ঝক ঝক ট্রেন চলেছে
রাত দুপুরে অই।
ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে

ট্রেনের বাড়ি কই ?

একটু জিরোয়, ফের ছুটে যায়

মাঠ পেরুলেই বন।

পুলের ওপর বাজনা বাজে

ঝন ঝনাঝন ঝন।

পাঠ্য বইয়ে কবি শামসুর রহমান রচিত কবিতাটি পড়ে কক্সবাজারের শিক্ষার্থীদের মনে রেল ভ্রমণ নিয়ে স্বপ্নের এক জগৎ থাকলেও অনেকের কাছে তা বাস্তবিক জীবনে নেহাৎ কল্পনাই ছিল। তবে কল্পনাকে অতীত করে এখন কক্সবাজার এর শিক্ষার্থীদের সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবে রুপ নিয়েছে। শুধু শিক্ষার্থী না কক্সবাজারের পেশাজীবিদের কাছেও স্বপ্নের বাস্তব রুপ।

গত ১লা ডিসেম্বর থেকে কালুরঘাট সেতু পাড়ি দিয়ে সবুজ ধানক্ষেত ও গহীন অরণ্যের বুক চিরে সমুদ্র নগরের পৌঁছে যায় বানিজ্যিক ট্রেন। এত দিন কক্সবাজার এক্সপ্রেস যাতায়াত করলেও রাত ৮ টাই কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে পর্যটক এক্সপ্রেস।

এর আগে ভোর ৬ টা ১৫ মিনিটে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে বিকাল ৩টাই বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম স্টেশনে যাত্রা বিরতি শেষে কক্সবাজার পৌঁছে পর্যটক এক্সপ্রেস। বুধবার রাত ৮টাই হুইসেল বাজিয়ে পতাকা উড়িয়ে কক্সবাজার থেকে শুরু হয় পর্যটক এক্সপ্রেস এর যাত্রা।

কক্সবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা পেশাজীবি ও কক্সবাজার এর বাহিরে দেশের নামকরা বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে জানব পর্যটক এক্সপ্রেস নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি, ভাবনা ও চাওয়া পাওয়া….

যোগাযোগের সহজ ও নিরাপদ মাধ্যম ট্রেন। দেরিতে হলেও কক্সবাজার ট্রেনের ছোঁয়া পেয়েছে তা নিঃসন্দেহে কক্সবাজার বাসীর জন্য আনন্দের। একি সাথে কক্সবাজার এক্সপ্রেস এর পাশাপাশি পর্যটক এক্সপ্রেস এর সংযুক্তি কক্সবাজারের মানুষের জন্য ট্রেন ভ্রমন আরো সহজতর হয়েছে। কক্সবাজার থেকে ট্রেনে করে প্রথম যাত্রা এটা। ট্রেন কর্তৃপক্ষের হসপিটালিটি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আমি চাইব পর্যটনের রাজধানী কক্সবাজারে পর্যটকদের ভ্রমণকে আরো সুন্দর করতে ও টিকেট কালোবাজারি রোধ করতে যথাযথ ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকুক।

-আরফাত রহমান সাকিব, স্নাতকোত্তর, বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ছোটবেলায় যখন জার্নি বাই ট্রেন রচনা পড়তাম। রচনায় বন্ধুরা মিলে ট্রেনে করে ট্যুর দিতো আবার পরিবারের সাথে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরতে যেতো।

তখন চাইলেও ট্রেনে উঠতে পারতাম না। ট্রেনে উঠা ছিল আমার কাছে এক প্রকার স্বপ্নের মতো। আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে আমাদের বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরইমধ্যে আজ ১০/০১/২০১৪ থেকে প্রথম যাত্রা শুরু করল পর্যটক-এক্সপ্রেস এবং আমি ও কক্সবাজার থেকে প্রথম যাত্রার যাত্রী হতে পেরে আনন্দিত। যাত্রাপথের প্রথম সঙ্গী হওয়াতে ফুল এবং চকোলেট দিয়ে বরণ করে নেওয়াতে আমি অনেক বেশি খুশি।

-অপরাজিতা বড়ুয়া, গনিত বিভাগ, অনার্স ৪র্থ বর্ষ, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা।

কক্সবাজার থেকে ঢাকা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণে প্রথম অভিজ্ঞতা হয় সুখবরের সাথে। এই ট্রেনটি সবচেয়ে দ্রুত এবং সুবিধাজনক যাতায়াত সরবরাহ করে। মডার্ণ সিটিং এবং ট্রেনবালাদের অমায়িক ব্যবহার, যা ট্রেন ভ্রমণকে আরো আনন্দময় এবং মনোমুগ্ধকর করে। ট্রেন অবশ্যই নিরাপদ ভ্রমন। ক্লান্তিহীন ও উচ্চমানের ভ্রমণ উপভোগ করতে পারেন এই ট্রেন ভ্রমণে। তাছাড়া কক্সবাজার পর্যটক নগরি হিসেবে ট্রেনের নামটাও অসাধারণ হয়েছে “পর্যটক এক্সপ্রেস”। আগে আমাদের বাসে যাতায়াত করতে হতো যেখানে অনেক হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়েছে। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি রেল মন্ত্রণালয়কে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত সেবার মাধ্যমে কক্সবাজারের মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করে দেওয়ার জন্য।

জুনাইদ উদ্দিন. এমবিএ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

আলহামদুলিল্লাহ দারুন এক জার্ণি ছিলো,আমরা সর্ব প্রথম পর্যটন এক্সপ্রেসে করে কক্সবাজার থেকে ঢাকা এসেছি। ফুল আর চকলেট নিয়ে আমাদের বরণ করেছে ট্রেন কর্তৃপক্ষ। স্টাফদের নম্র ভদ্র আচারণ, কিচেনের ধারুণ মজার মজার কিছু খাবার, সিট গুলো ছিলো অসাধারণ,সব চেয়ে ভালো লেগেছে নামাজ পড়তে পেরেছি খুব ভালোভাবে। পর্যবেক্ষণ চতুর দৃষ্টিসম্পন্ন। কাউকে সন্দেহ লাগলে ওনাদের সাথে কথা বলতেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনি আছে তৎপরতায়। টাইম সিডিউল টা বেশি অসাধারন লেগেছে ৮:০০ টাই বলেছে ঠিক ৮:০০ টাই ছেড়েছে। বিরতি বলেছে ঠিক ঐ টাইম থেকে ১ মিনিট লেইট হয় নাই। টাইম এর ব্যাপারে খুবই সিন্সিয়ার ছিলো ওনারা। আর নিরাপত্তার ব্যাপারে কোন সন্দেহ ছিলোনা। আলহামদুলিল্লাহ সব কিছু মিলিয়ে প্রথম বার ট্রেন জার্ণি পর্যটক এক্সপ্রেস এর মাধ্যমে। কোন রকম অঘটন ছাড়া যথা সময়ে আল্লাহর রহমতে পৌঁছাতে পেরেছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ফয়সাল বিন আমান, রিপ্রেজেন্টেটিভ, নাভানা ফার্ফা।

আমি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে বিদেশ চলে যাবো। আমার আরো আগে যাওয়ার কথা ছিলো। নির্বাচন আর অন্য কাজ শেষ করতে দেরি হওয়াতে যাওয়া হয়নি। আমি মনে করেছিলাম হয়ত আমার আর ট্রেনে যাওয়া হবে না। কিন্তু আমার যাওয়া পিছনে হওয়াতে আমার ইচ্ছাটা পূরণ হয়ে গেল।, খুব ভালো লাগছে কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাবো ট্রেনে এটা স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ঘটেছে।

ট্রেনের পরিবেশ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেক ভাল। রেল কর্তৃপক্ষ এটা ধরে রাখতে পারলে দারু হবে।

জাহাঙ্গীর কবির রানা, প্রবাসী।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.