The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

পর্দার কারণে ভাইভায় মুখ দেখাতে না পেরে নম্বরবঞ্চিত হচ্ছেন ঢাবি ছাত্রী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) বাংলা বিভাগে পর্দা করে মুখ না দেখানোয় এক নারী শিক্ষার্থীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীর দাবি, তাকে আগের সেমিস্টারে একই কারণে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগে দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভাইভা দিতে যায় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা তার মুখ দেখতে চাইলে পর্দা (নিকাব) করার কারণে ওই শিক্ষার্থী মুখ দেখাতে অসম্মতি জানান। উক্ত কারনে শিক্ষার্থীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখায় ভাইভা বোর্ড। একই কারণে প্রথম সেমিস্টারের ভাইভাতে উপস্থিত হলেও অনুপস্থিত দেখানো হয় তাকে।

দুইজন অধ্যাপক ও দুইজন সহযোগী অধ্যাপকের সমন্বয়ে গঠিত উক্ত ভাইভা বোর্ডের প্রধান ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন শামীম। বোর্ডে আরও ছিলেন অধ্যাপক ড.ভীস্মদেব চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক সোহানা মেহবুব, সহযোগী অধ্যাপক ড.তারিক মনজুর।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, আমি নিকাব করে ভাইভা পরীক্ষা দিতে গেলে শিক্ষকরা আমাকে নিকাব খোলা সাপেক্ষে উপস্থিতি স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি বারবার তাদেরকে অনুরোধ করি যে, নন মাহরাম কারো সামনে আমি নিকাব খুলি না। আমি একাধিক ম্যাডামের সামনে আমার মুখ খুলে আমার পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি। কিন্তু শিক্ষকগণের বক্তব্য তারা আমার নিকাব খুলে চেহারা প্রদর্শন না করলে ভাইভা পরীক্ষা নিবেন না এবং উপস্থিতি স্বাক্ষর করতেও দিবেন না। আমি আবারো তাদের অনুরোধ জানাই যেন, একাধিক ম্যামের সামনে আমার চেহারা শনাক্ত করে নিকাব পরিহিত অবস্থায় আমার ভাইভা নেয়া হয়। কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং আমাকে গত ফার্স্ট সেমিস্টারসহ দুই সেমিস্টারের ভাইভাতে অনুপস্থিত করে দেন। আমি তাদের কাছে বার বার অনুরোধ করলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয় যে আমার ভাইভা তারা আমার মুখ দেখা ছাড়া গ্রহণ করবে না।

সেই নারী শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমার পর্দা করা কি অন্যায়? আমি শুধু পর্দা করার কারণে ভাইভাতে উপস্থিত থেকেও কোন মার্ক পাচ্ছি না। যার ফলে এটি আমার রেজাল্টে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।

ভাইভা বোর্ডের সদস্য সহযোগী অধ্যাপক ড.তারিক মনজুর জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী চেহারা ও কান দেখে পরীক্ষার্থীকে শনাক্ত করেই পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়। ঠিক অনুরূপভাবে ভাইভাতেও একই কাজ করা হয়। সুতরাং আমরা এখানে নিয়মের বাইরে কিছুই করিনি। তবে তাকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখানো হয়নি। তাকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল যাতে সবকিছু ভেবেচিন্তে (অর্থাৎ চেহারা দেখানো সাপেক্ষে) পরেরদিন আসতে পারে। তবে সেই সুযোগও গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়।’

দুইবার অনুপস্থিতির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থী পরপর যদি একই ভুল করে তাহলে তাকে নিয়ম অনুযায়ী দুইবার কেন দশবার অনুপস্থিত দেখানো হবে।’

ভাইভা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন শামীম ও বোর্ডের অপর দুই সদস্য অধ্যাপক ড. ভীস্মদেব চৌধুরী ও সহযোগী অধ্যাপক সোহানা মাহবুবকে ফোনে একাধিক কল করা হলেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া জায়নি ।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী যদি ডিপার্টমেন্ট কোনো কিছু করে থাকে তাহলে সেটা তো ডিপার্টমেন্টের বিষয়। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে শিক্ষার্থী যদি বাড়তি কোনো সুবিধা পেতে চায় তাহলে তো তা আমাদের জানানো উচিত। তবেই আমরা একটা পদক্ষেপ নিতে পারব। আমাদের প্রশাসন তো সবসময় শিক্ষার্থীদের সুবিধার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.