The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

পরকীয়া প্রেমিক নিয়ে ঘুমন্ত স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা, স্ত্রীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সেনবাগে পরকীয়া প্রেমিক নিয়ে স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী রজ্জবের নেছা রিনাকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এখনো পলাতক রয়েছে ঘাতক পরকীয়া প্রেমিক।

নিহত মো.মঈন উদ্দিন (৪৫) উপজেলার ডুমুরুয়া ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের হরিণকাটা গ্রামের ফকির বাড়ির মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। চট্রগ্রামের ধনিয়ালাপাড়া এলাকায় তিনি নিজের একটি রেস্তোরাঁ চালাতেন।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলের দিকে আসামিকে আদালতে হাজির করেন সেনবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.ফারুক। এরপর স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন নিহতের স্ত্রী রজ্জবের নেছা। নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.ইকবাল হোসাইনের আদালত এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এর আগে,রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার ডুমুরুয়া ইউনিয়নের হরিণকাটা গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। পরে সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে ময়না তদন্ত শেষে লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেফতারকৃত আসামির বরাতে তিনি বলেন, নিহত মঈন উদ্দিন তার ব্যবসার কাজে প্রায় চট্রগ্রাম শহরে থাকতেন। এ সুযোগে গত ২-৩ বছর ধরে তার স্ত্রী রজ্জবের নেছা বাড়ির পাশের মো.মাসুদ (৩৫) নামে এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে তারা পরস্পর অসংখ্যবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। একপর্যায়ে বছর খানেক আগে রজ্জবের নেছাকে তার স্বামী ডিভোর্স দিয়ে দেয়। ডিভোর্স দেওয়ার ফলে সে স্বাভাবিক ভাবে বাবার বাড়ি চলে যায়। তাদের সংসারে তিনটি সন্তান থাকায় তাদের দিকে তাকিয়ে তাকে পুনরায় সামাজিক ভাবে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। নিয়ে আসার পরও তার চরিত্রর পরিবর্তন ঘটেনি।

ওসি আরও বলেন, এরপরও বিভিন্ন সুযোগে সে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে সম্পর্ক চালাতে থাকে। স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে পরকীয়া প্রেমিক মাসুদের সাথে নিহত মঈন উদ্দিনের বড় ধরনের শক্রতা সৃষ্টি হয়। ফলে পরকীয়া প্রেমিক মাসুদ একাধিকবার রজ্জবের নেছার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেয়। মঈন উদ্দিন বাড়িতে এলে বিষয়টি সহ্য করতে পারতোনা পরকীয়া প্রেমিক। এই জন্য তাকে মেরে ফেলার জন্য তার স্ত্রীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে সে। গত ৩-৪দিন আগে এই নিয়ে পরকীয়া প্রেমিকসহ প্ল্যান করে রজ্জবের নেছা।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, নিহত মঈন গ্রামের বাড়িতে এলে নিয়মিত গরুর দুধ পান করত। ঘটনার আগের দিন পরকীয়া প্রেমিক রজ্জবের নেছাকে ১৪-১৫টি ঘুমের ওষুধ দেয়। গত রোববার রাত ৯-১০টার দিকে দুধের সাথে মিশিয়ে সে তার স্বামীকে সবগুলো ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। এত গুলো ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে সে অচেতন অবস্থায় ঘুমাতে ছিল। একপর্যায়ে রাত ৩টার দিকে পরকীয়া প্রেমিক মাসুদ ও রজ্জবের নেছা তাকে ঘর থেকে বের করে বাড়ির উঠানে নিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে। পরে বাড়ির উঠানে স্বামীকে মুর্মূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে ঘরে ঢুকে উল্টো নাটক সাজায় ঘাতক স্ত্রী।

জানা যায়, এ ঘটনায় ভিকটিমের মা রাহেলা আক্তার (৬০) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সেনবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনার ১৮ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত স্ত্রীকে গ্রেফতার করে নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। একই সাথে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.