নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: নিরাপদ সড়ক, খাবারে ভতুর্কি, ক্লাসরুম সংকট, ইন্টানেট সমস্যাসহ মোট ১১ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১১টার সময় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসময় বিশ^বিদ্যালয়ের সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ফলে ক্যাম্পাসে সকল প্রকার যান প্রবেশ ও শিক্ষার্থীদের চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
এসময় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা আন্দোলনস্থলে আসলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে এবং শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে দেখা যায় তাদের।
পরবতীর্তে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে ও অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থীদের ১১ দফাগুলো হলো:
১. নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষক—কর্মকর্তাবৃন্দ ডাবল ডেকার বাসে যাতায়াত করবেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিনি বাস ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে।
২. আগামীতে শিক্ষক—কর্মকর্তা—কর্মচারীসহ সকল নিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে এবং কর্মকর্তা—কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সিজিপিএ শিথিল করতে হবে।
৩. নিরাপদ খাবারের ব্যবস্থার পাশাপাশি খাবারের দামের সাথে মানের সমন্বয় করতে হবে। অন্যথায় টিচার্স ক্যান্টিনে শিক্ষার্থীদের খাবারের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
৪. প্রতিটি আবাসিক হল এবং কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় খাদ্যে ভর্তুকি দিতে হবে এবং ক্যাফেটেরিয়ার আধুনিকায়ন করতে হবে।
৫. সিজিপিএ ২.৭৫ পর্যন্ত মনোন্নয়ন পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে হবে। যেকোনো সময় ব্যাকলগ এবং মনোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. মার্ক টেম্পারিং রোধে পরীক্ষার উত্তরপত্র থেকে অতিশীঘ্রই আইডি নম্বর তুলে দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭. ক্লাসরুম সংকট নিরসন না করে কেন নতুন নতুন বিভাগ চালু করা হচ্ছে তার জবাব দিতে হবে। এবং ক্লাসরুম সংকট নিরসনে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৮. আধুনিক সুবিধা সম্বলিত জিমনেশিয়াম এবং দৃষ্টিনন্দন মুক্তমঞ্চ স্থাপন করতে হবে।
৯. বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পুরো ক্যাম্পাসকে ধীরগতির ইন্টারনেট সুবিধা পরিহার করে দ্রুতগতির ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
১০. বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে।
১১. প্রশাসন কর্তৃক মোরাল পুলিশিং বন্ধ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ দিতে হবে।
বেলা সাড়ে ৩ টায় আন্দোলনরত সাধারন শিক্ষার্থীরা জানান, আগামী সোমবার (১২ তারিখ) দুপুর ১২ টার মধ্যে যদি প্রশাসন থেকে স্পষ্ট কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে আরো কঠোর আন্দোলনে নামবেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান রিমন বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বাহিরে থাকার কারনে আমরা এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আগামীকাল ভিসি স্যার, প্রো—ভিসি স্যার ও কোষাধ্যক্ষ স্যার আসলে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো।