নাজমুস সাকিব আদিব, ঢাবিঃ নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কয়েকশ শিক্ষার্থী এ সমাবেশে অংশ নেন।
কর্মসূচিতে ‘দাবি মোদের একটাই নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘অনিয়মের ঠাঁই নাই, নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘ক্যাম্পাসে রক্ত ঝরে, প্রশাসন কী করে?’, ‘বিকেকের প্রশ্ন করি, এবার যদি আমরা মরি’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা তাহসিনা সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবি গুলো নিম্নরুপ:
১.বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল যানবাহনের গতিসীমা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ, শব্দ দূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা ও শান্তির বিধান নিশ্চিত করা।
২.রুবিনা আক্তার হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ সমর্থন ও সহযোগিতা আদায় করা।
৩.ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে প্রধান প্রবেশদ্বারগুলোতে দ্রুত চেকপোস্ট বসানো ও গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা।
৪.বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শুধুমাত্র নিবন্ধিত রিক্সা চলাচল এবং রিকশাচালকদের জন্য ইউনিফর্ম ও ভাড়ার চার্ট প্রস্তুত করা।
৫.ভ্রাম্যমাণ দোকানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ ও প্রশাসন কর্তৃক যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করা এবং ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখতে ন্যূনতম ৩০০ ডাস্টবিন স্থাপনের ব্যবস্থা করা।
৬.প্রথম বর্ষ থেকে সকল শিক্ষার্থীকে আইডি কার্ড দেওয়া এবং ক্যাম্পাসের কিছু স্থানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা।
৭.মাদকাসক্ত ও ভবঘুরে ব্যক্তিদের ক্যাম্পাস থেকে উচ্ছেদ করা।
৮.সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে সিসিটিভির আওতায় আনা এবং ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা।
৯.প্রক্টর অফিসে জমে থাকা সকল অভিযোগ নিষ্পত্তি করা।
১০.নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রক্টোরিয়াল অফিসের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
১১.নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিগুলো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা।
গত শুক্রবার বিকেলে মোটরসাইকেলে শাহবাগ হয়ে হাজারীবাগে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়েন রুবিনা নামের এক নারী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আজাহার জাফর শাহর প্রাইভেট কারের ধাক্কায় তিনি ছিটকে চলে যান ওই গাড়ির নিচে।দুর্ঘটনার পর গাড়ি না থমিয়ে আটকে থাকা রুবিনাকে ছেঁচড়ে প্রায় এক কিলোমিটার নিয়ে যান চালক। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক এক সন্তানের মা রুবিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনার পর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মশাল হাতে বিক্ষোভ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও অংশ নিতে দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদও রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে।
এসব কর্মসূচি থেকে ওই নারীর মৃত্যুর বিচারের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ, অবাধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে প্রবেশ পথগুলোতে পাহারা চৌকি বসানোসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।