পবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও সম্প্রতি তিনি বরখাস্ত হলেও স্বপদে বহাল রয়েছেন।
রেজিস্ট্রার অফিস সূত্র মতে জানা যায়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসানকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ১২(১) এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধানের ৯(১) ধারা মোতাবেক তাকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসানকে বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু বরখাস্তের কয়েকমাস পেরিয়ে গেলেও অধ্যাপক মেহেদী হাসান এখনো স্বপদে দায়িত্ব পালন করছেন। সরেজমিনে তার চেম্বারে গিয়ে দেখা যায় অফিস কক্ষের সামনে তার নামসহ বিভাগীয় প্রধান উল্লেখ করা নেমপ্লেট।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১০ সালে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক (নন টেকনিক্যাল) পদে চাকরি পান মেহেদী হাসান। তবে তখন যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এতে প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট অনুষদে স্নাতক ডিগ্রির অধিকারী হতে হবে। শিক্ষা জীবনের সব স্তরে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি থাকতে হবে। পাশাপাশি প্রার্থির জিপিএ/সিজিপিএ ৪ এর জন্য কমপক্ষে ৩ দশমিক ৭৫ থাকতে হবে বলে শর্ত দেওয়া ছিল। তবে মেহেদী হাসানের সিজিপিএ ২ দশমিক ৯৫। এরপরও তিনি নিয়োগ পেয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন প্রভাবশালী স্থানীয় এক নেতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডেপুটি রেজিস্ট্রার প্রভাব খাটিয়ে তাকে নিয়োগ দেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রফেসর মেহেদী হাসান বলেন, “আমার নেমপ্লেট সরানো হয়নি। নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, স্নাতকে প্রথম শেণীর শর্ত শিথিল করা যেতে পারে এমন শর্ত ছিল তাই নিয়োগ পেয়েছি। কিন্তু আপনার স্নাতকের ফলাফল গ্রেডিং পদ্ধতিতে তাহলে কিভাবে শর্তের আওতায় পড়লেন জিগ্যেস করলে বলেন, আমি আবেদন করেছি, কতৃপক্ষ ভাইভা কার্ড দিয়েছে, ভাইভা বোর্ডে উত্তীর্ণ হয়েছি। যারা নিয়োগ দিয়েছে আমাকে এবিষয়ে তাদেরকে জিগ্যেস করেন।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর প্রফেসর ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তাকে বিভাগীয় প্রধান থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। কেন তিনি এখনো বিভাগীয় প্রধানের নেমপ্লেট ব্যবহার করেছেন তা তিনিই বলতে পারবেন, তবে নিয়মানুযায়ী এটা করতে পারেননা। নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমি দেখেছি তার(মেহেদী হাসান) রেজাল্টের সাথে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত রেজাল্টের তারতম্য রয়েছে। তৎকালীন প্রশাসন কি মনে করে তাকে নিয়োগ দিয়েছেন তা তারাই বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, “বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত যোগ্যতার সাথে প্রার্থীর যোগ্যতার মিল না থাকলে নিঃসন্দেহে তা অনিয়ম এবং আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব।”