ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও উপাদানপ্রকল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল গবেষণা ইনস্টিটিউট (নিটার)। নিটার ছাড়াও অধিভুক্ত বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো: ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শ্যামলী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বেসরকারি), কে এম হুমায়ুন কবীর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বেসরকারি), সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজি (বেসরকারি)।
নিটার একটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রতিষ্ঠান হলেও রিটেক ব্যতীত শুধু পড়াশোনা ও পরীক্ষার ফি বাবদই চার বছরে গুনতে হয় পাঁচ লাখ পঁচিশ হাজার টাকা (৫,২৫,০০০/-)। যেখানে প্রতি আড়াই থেকে তিনমাস পর পর কিস্তি হিসেবে ২৯,০০০ টাকা পরিশোধ করতে হয় একজন নিটারিয়ানকে। কোনো শিক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণের (১০/-) জরিমানা যুক্ত হতে থাকে। তবে বর্তমানে জরিমানা মওকুফের ক্ষেত্রে ও নিটার প্রশাসনের রয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি।
বিশদভাবে খোঁজ নিলে জানতে পারা যায়, অনেককে শুধু জরিমানা হিসেবে গুনতে হয় হাজার তিনেক বা এর ও বেশি অর্থ। পরবর্তীতে তাদের সেই টাকা সহ ই কিস্তি পরিশোধ করতে হয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, রিটেক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের হতাশার শেষ নেই। নিটারে ক্লাস টেস্ট (সিটি) পরীক্ষাগুলোর মার্ক কম থাকার কারণে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের একটা বিরাট অংশকে বিভিন্ন কোর্সভেদে রিটেকের ভোগান্তি টানতে হয়।
মূল পরীক্ষায় রিটেক দেওয়া গেলেও নিয়মনীতির বেড়াজালের কারণে ক্লাস টেস্টের মার্ক ইমপ্রুভের কোনোপ্রকার সুযোগ থাকে না। যার দরুন রিটেকে আটকে থাকা শিক্ষার্থীদের পড়তে নতুন ঝামেলায়! একে রি-রিটেক এর ফাঁদে পড়া বলা চলে।
দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের লেভেল-১ টার্ম-১ এর ইন্ট্রোডাকশন টু টেক্সটাইল (কোর্স কোড: ১১০৮) তেই আড়াইশো শিক্ষার্থীর মধ্যে একশত দশ জনের সেই কোর্সটিকে রিটেক এসেছিল, খোঁজ নিয়ে দেখা যায় এদের বেশিরভাগেরই ক্লাস টেস্টে ১০ এর নিচে মার্ক ছিল। শিক্ষার্থীরা মনে করেন এইরকম অস্বাভাবিক হারে রিটেক আসাটা প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত।
কোনো পরীক্ষার্থী রিটেক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হলে তাকে গুনতে হয় চার হাজার ছয় শত টাকা (৪৬০০/-)। আবার, সে যদি ঐ বিষয়ে পুনরায় অকৃতকার্য হয় কিংবা কোনো কারণে প্রথম রিটেক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে তাকে গুনতে হয় দশ হাজার টাকা (১০,০০০/-)।
সরেজমিনে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই অস্বাভাবিক নিয়ম অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চালু নেই। তাহলে কোন প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে, কোন আইনের বলে নিটার কর্তৃপক্ষ দশ হাজার টাকা রি-রিটেক পরীক্ষার ফি হিসেবে ধার্য করেছে সেবিষয়ে স্পষ্ট উত্তর প্রত্যাশা করেন শিক্ষার্থীরা।
অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “কিসের পিপিপি? টাকা তো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি গুলোর মতোই দিয়ে যাচ্ছি।” এমনকি শুধু নিটারেই কেন রি-রিটেকের ক্ষেত্রে দশ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে, এই টাকা কোথায় কোন খাতে ব্যবহৃত হচ্ছে – সেই ব্যাপারেও নীতিনির্ধারকদের কাছে জানতে চায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।