মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ, জবিঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, পথনাটক প্রদর্শন, আলোকচিত্র ডকুমেন্টেশন ও স্থাপনা শিল্প প্রদর্শনী, সংগীত পরিবেশনা ও আলোচনা সভা সহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনর্মিত, কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। এরপর সকাল ৯টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, শিক্ষক সমিতি, আওয়ামী পন্থী নীলদল, স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির পক্ষ হতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যের সন্নিকটে এদিন দুপুরে নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে পথনাটক “স্যার, একটু বাইরে আসবেন…….” প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। প্রদশর্নীটি ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগীত বিভাগের উদ্যোগে সংগীত পরিবেশনার মধ্যদিয়ে আলোচনা সভার কার্যক্রম শুরু হয়। সভার শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনার সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ-এর সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ডা. আলীম চৌধুরীর কন্যা ও বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ নূজহাত চৌধুরী বলেন, “দেশের জন্য বঙ্গবন্ধুসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদানকে অস্বীকার করার ব্যর্থ চেষ্টাকে প্রতিহত করতে হবে। মনে রাখতে হবে ‘জয় বাংলা’ আমাদের পিতৃপুরুষদের শেষ নিঃশ্বাসের স্লোগান ছিল, মুক্তিযুদ্ধকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখতে হবে এবং এর সঠিক ইতিহাসকে কখনও বিধ্বস্ত করা যাবে না। রাজাকার-আলবদর, যুদ্ধাপরাধীরা বাংলাদেশের যে কোনো রাষ্ট্রীয় পদে যেন আসীন হতে না পারে- সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সেই সাথে ধর্মীয় পরিচয়কে জাতিগত পরিচয়ের বিরুদ্ধে দাঁড়া করানোর বিরোধীতা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন “মুত্তিযোদ্ধাদের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে; আদর্শ জাতি গঠনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও চেতনাকে বুকে ধারণ করতে হবে।”
রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ও শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক. এস. এম. মাসুম বিল্লাহ, লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান খন্দকার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম, ছাত্র-কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মো. জহুরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাদের, কর্মচারী সমিতির সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ, সদস্য রিদুয়ান ইসলাম, আবু সুফিয়ান সরকার শুভ, রুদ্র শুভ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে ‘স্টপ জেনোসাইড’ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।