সারওয়ার মাহমুদ, চবিঃ ‘এসো হে নবীন, বাজিয়ে সুর-লহরী উল্লাসিত নব বীণ। আজ সুর মিলিয়ে গাইব জয়যাত্রার গান, আনন্দে আহ্লাদিত নবীন প্রাণ।’ নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করতে এমন বাক্যই যেন উচ্চারিত হচ্ছে প্রবীণদের কন্ঠে’। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রত্নভূমি নরসিংদী থেকে আগত ২১-২২সেশনের সকল শিক্ষার্থীর নবীন বরন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম জেলা এসোসিয়েশন নরসিংদী জেলা ছাত্র কল্যান সমিতি কতৃর্ক নবাগত চবিয়ানদের গতকাল বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারী) ক্যাম্পাসের বোটানিক্যাল গার্ডেনে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবীনদের বরণ করে নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সমিতির সভাপতি হোসাইন আল মামুনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামের সন্ঞ্চালনায় স্বাগত ও দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রিত শিক্ষক মন্ডলী ও অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড.দানেশ মিয়া বলেন-আমি ৮৯-৯০ সেশনের ছাত্র ছিলাম। ১৯৯০ সালে নরসিংদী জেলা ছাত্র কল্যান সমিতির সমিতির বেড়ে উঠা আমার চোখের সামনেই।সমিতির গঠনতন্ত্র আমার নিজের হাতে লেখা।সেই থেকে এই সমিতির সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক। অনেক সময় ব্যস্ততায় সময় দিতে পারি না।আমার জম্মভূমি নরসিংদীর নবীনদের দেখে সত্যি অনেক আনন্দিত।
এছাড়া আমন্ত্রিত শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হালিমা বেগম,বন ও পরিবেশে বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.সোহাগ মিয়া ,নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীম আফরিন,সহযোগী অধ্যাপক নুসরাত জাহান,চবির সহকারী প্রক্টর হাসান মোহাম্মাদ রুমান, দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমান আহমেদ,ফলিত রসায়ন বিভাগের প্রভাষক শারমিন জামান প্রমুখ। অতিথি হিসেবে ছিলেন সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা মানিক মিয়া,সিবিএ সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সহ চট্টগ্রাম জেলা সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে হোসাইন আল মামুন বলেন-নরসিংদী জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক ছাত্র সমিতি গুলোর অন্যতম। এই সংগঠন নরসিংদী জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থী এবং ছাত্র ছাত্রীদের একটা বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করে দেয় পাশাপাশি যে কোনো ধরনের সামাজিক কার্যক্রমে এগিয়ে আসে। নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন উপলক্ষে নরসিংদী জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে অন্যান্য শিক্ষার্থী ও স্যারদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে বলে আশা রাখছি তাছাড়া নতুন শিক্ষার্থীরা এই সমিতির বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত হবে।
বক্তৃতা পর্ব শেষে চলে ছাত্র- শিক্ষক,নবীন-প্রবীন সবাই মিলে মধ্যাহ্নভোজ। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, কৌতুক,দিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের মাতিয়ে তোলেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।পাশাপাশি নবাগত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
নবীণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে মার্কেটিং বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মোসা:সুমাইয়া বলেন-আমাদের জেলা সমিতির পক্ষ থেকে, আমাদের জন্য এতো বড়ো পরিসরে নবীণ বরণের আয়োজন করেছে, ভাবতেই খুব গর্ব হচ্ছে। শিক্ষক ও সিনিয়র ভাই-বোনদের স্নেহ-ভালোবাসা ছিল সেরাদের সেরা৷আমাদের এ বন্ধন সবসময় অটুট থাকবে। আমি “রত্নভূমি নরসিংদী” এর একজন হতে পেরে গর্বিত।সবাই দোয়া রাখবেন আমিও যেন “রত্নভূমি নরসিংদী”র ঐশ্বর্য্য-গর্ব-আভিজাত্য বাজায় রাখতে পারি।
নবীণ বরণ পেয়ে অত্যন্ত খুশি নরসিংদী জেলা থেকে আসা ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থীরা । নৃবিজ্ঞান বিভাগের ইমরান মাহমুদ এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের তাজুল ইসলাম নেহাল ও নবীণ বরণ শেষে রাইজিং ক্যাম্পাস কে জানান-আলহামদুলিল্লাহ প্রথমেই আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী, প্রিয় অবিভাবক ও আমাদের বড় ভাই,আপুদের প্রতি,,তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমেের ফলে আমরা এমন সুন্দর নবীনবরণ উপহার পেয়েছি ,আজকের এই দিনটা আমাদের জীবনের সেরা একটা মুহুর্ত ছিলো, নিজের শিকড় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকে একখন্ড নরসিংদী জেলা ছাএ কল্যাণ সমিতিকে পেয়ে আমার মনে হয়েছে আমরা আমাদের নিজেদের পরিবারকে কাছে পেয়েছি। আমাদের এ নবীনবরণ এককথায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া সবচেয়ে সেরা একটা নবীনবরণ। আমরা সত্যিকার অর্থে গর্বিত, আমরা বড় ভাইদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের সংগঠনকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাবো এবং সংগঠনের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য যে, বিগত বছর গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা, ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি, বনভোজন, চড়ুইভাতি সহ আরো অনেক গুলো সেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অঞ্চল ভিত্তিক সংগঠন নরসিংদী জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতি।