প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশে রয়েছে হাজারও পর্যটন কেন্দ্র। তবে নদীমাতৃক এই দেশে নদীর পাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে মানুষ ভালোবাসে। কিন্তু যদি হয় আরো সমুদ্র সৈকত তাহলেতো কোনো কথাই নাই। আর এই সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য দেখতে এসেছিল ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাত ৯ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল ভাস্কর্য সংলগ্ন থেকে শিক্ষার্থীরা বাসে করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয় বর্ষের ‘রুরাল ডেভেলপমেন্ট’ কোর্সের ফিল্ড ট্যুরের উদ্দেশ্যেই এসেছিল শিক্ষার্থীরা।
প্রায় ১১ ঘন্টা বাস ভ্রমন শেষে সকাল ১০ টার দিকে কক্সবাজার ‘কলাপাড়া সি বিচে’ পৌঁছায় শিক্ষার্থীরা। এরপর ‘ওয়ার্ল্ড সি বিচ’ নামে রিসোর্টে চেক ইন করার পর সবাই সমুদ্র সৈকতের পাড়ে যায়। সমুদ্রের ঢেউয়ের স্রোতের কলকলানি, পাখির কিচিরমিচির শব্দ যেন হৃদয়কে পুলকিত করে তুলে। সমুদ্রের লোনা পানিতে ঢেউয়ের সাথে অনেকক্ষণ শরীর দুলিয়ে গোসল করে তারা। সন্ধ্যার আগের লাল আভা সূর্য দেখার জন্য সবাই বীচের ধারে যায়। আর বড় আকৃতির রক্তিম সুর্য অস্ত যাওয়া উপভোগ করে সবাই। এরপর সকলেই হোটেলে ফেরত যায়। হোটেলে রাত্রি যাপন করে ২৮ নভেম্বর সকালে আবার রওনা হয় বান্দরবানের উদ্দেশ্য। বান্দরবানে পাহাড় কাটা আঁকাবাঁকা রাস্তার চারপাশের পরিবেশ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতির যে অপরুপ সৌন্দর্য রয়েছে তা বান্দরবানে আসলেই উপলব্ধি করা যায় আরো ভালোভাবে। বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মানুষের ভীড় বলে দেয় এখানের সৌন্দর্যের কথা। এখানে অনেক উঁচু উঁচু পাহাড়ের সমারোহ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। বান্দরবানে দুইদিন থাকার পর সকলে আবার পাড়ি জমায় আপন ঠিকানা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
এবিষয়ে স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, “প্রতিবছর ছেলেমেয়েরা তাদের ‘রুরাল ডেভেলপমেন্ট’ কোর্সের আন্ডারে ফিল্ড ভিজিটে আসে।আমরা চেষ্টা করি বিভিন্ন জায়গায় যে ‘প্লেস বেইজড ডেভেলপমেন্ট’ হচ্ছে, সেগুলো সম্পর্কে ছেলে-মেয়েদের ধারণা দেওয়ার জন্য। পর্যটন নগরী কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে যে ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে, সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্যই শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে এসেছি। ছেলে-মেয়েদের অনেকেই প্রথমবারের মতো সমুদ্র দেখছে। তাদের যে উল্লাস, যে অনুভূতি, যে অবাক বিষ্ময়কর চোখ আমাকে প্রচুর আনন্দ দিচ্ছে। আমি তাদের সাফল্য কামনা করি। আমি চাই যে, তারা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করুক। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তারা অনেকদূর এগিয়ে যাক।”
স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী সিফাত তাসনিম মিতু বলেন, “আমি প্রথম এত সুন্দর একটি জায়গায় এসেছি। আমার সারাদিনেও মন ভরেনি সমুদ্রের ঢেউয়ের কলকলানি গান শুনে। আমি আবার আসতে চাই এই সমুদ্র সৈকতে। আপন মনে ক্ষানিকটা সময় নিজের করে নিয়ে এই সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।”