The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে হল খোলা নিয়ে উপাচার্য ও শিক্ষার্থীদের বাকবিতন্ডা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের ছুটিতে হল খোলা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুঠোফোনে কথা বলার সময় বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন অবকাশ ও পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১১ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। ৪ জুন ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি জানিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট বরাবর আবেদন করে হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীরা। আবেদন বিবেচনা করে পূর্ব নির্ধারিত ১৬ জুনের পরিবর্তে ১৮ জুনের মাঝে শিক্ষার্থীদের হলগুলো ত্যাগের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং ৬ জুলাই হল খোলার সিদ্ধান্ত আসে। হল ১৭ দিন বন্ধের ঘোষণায় অসন্তোষ্ট শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের সাথে সাক্ষাৎ না পেয়ে মুঠোফোনে হল খোলা রাখার দাবি জানান। উপাচার্যের সাথে এ কল রেকর্ডের কথোপকথনই মূহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া রেকর্ডটিতে শিক্ষার্থীদের বলতে শোনা যায়, “আমরা হল ছাড়বো না। প্রতিউত্তরে উপাচার্য সৌমিত্র শেখরকে বলতে শোনা যায়, “তোমরা যদি থাকো, যারা থাকবে তাদের নাম এনলিস্টেড হবে। এই হলের কোনো কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তোমাদের পরিবারকে জানানো হবে এবং তোমাদেরকে ডেমারেজ দিতে হবে।আইন ভঙ্গের জন্য যা যা করণীয়, আমরা তাই করবো। তুমি যদি থাকতে চাও থাকো।” তখন শিক্ষার্থীদের বলতে শোনা যায়, স্যার আপনি কি আমাদের হুমকি দিচ্ছেন? এই কথার প্রতিউত্তরে উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, “না, কোনো হুমকি না।”

৯ মিনিট ৪০ সেকেন্ডর কল রেকর্ডেটিতে উপাচার্যকে আরো বলতে শোনা যায়, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে কর্মকর্তা কর্মচারীর প্রয়োজন, আমার হাতে কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী নেই।” কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকাকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ব্যার্থতা বলায় রেগে গিয়ে উপাচার্য বলেন, “কোনো ব্যার্থতা নেই।এ ধরনের লম্বা লম্বা কথা বলো না।ব্যর্থতার কোনো বক্তব্য নেই।ব্যার্থতা কি?” তখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে জানায়, হল বন্ধ কিন্তু ডরমেটরি খোলা এ কেমন নিয়ম স্যার? হল বন্ধ থাকলে ডরমেটরিও বন্ধ থাকতে হবে। উত্তরে উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, “কবে ছুটি আর কবে খোলা এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারেই আছে। এখানে কোনো ডরমেটরির বিষয় না, হলের ক্ষেত্রে হল কর্তৃপক্ষ আছে। হল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তেই তোমাদের চলতে হবে।”

হল খোলা রাখার দাবিতে বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মমিন মিয়া জানান, “প্রভোস্ট স্যার চাইলেই পারতেন হল খোলা রাখতে। ভিসি স্যার আর প্রভোস্ট স্যারের জন্যই দ্রুত হল বন্ধ হয়ে গেলো। আমরা যারা টিউশন করাই, অল্প কয়দিনের জন্য মেসে রুম নিতে হচ্ছে। এছাড়া অনেক চাকুরী পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হলো।”

ছড়িয়ে পড়া রেকর্ডটিতে ত্রিশাল সোনালি ব্যাংকে ইন্টার্নিশিপে থাকা এক শিক্ষার্থীর রেজাল্ট নিয়ে হুমকি দিতেও শোনা যায় উপাচার্য অধ্যাপক ড.সৌমিত্র শেখরকে।

এ ব্যাপারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদার বলেন, “হল বন্ধের ব্যাপারটা একটা সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। শিক্ষক কর্মকর্তাদের একটা বার্ষিক ছুটি এবং সকল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে যা গৃহীত হয়েছে। খোলা ক্যাম্পাসের হল মেইনটেইনেই যেখানে হিমসিম খেতে হয়, সেখানে নিজেদের ছুটি মাটি করে এত বড় ক্যাম্পাসের দায়িত্ব কেউ ই নিতে চাইবে না। নিয়মমাফিক এবং যৌক্তিকভাবেই হলগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন্ধ ক্যাম্পাসের দায় ভার হল প্রশাসনের নয়।”

শিক্ষার্থীদের আনদোলনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড সৌমিত্র শেখরের কাছে জানতে চাইলে বলেন, “ক্যাম্পাসে কোনো আন্দোলন হয় নি। আমার ক্যাম্পাসের ৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০/২৫ জন শিক্ষার্থী আসছিল প্রশাসনিক ভবনে হল খোলা রাখার অযৌক্তিক দাবি নিয়ে, যাদের একটা অংশ হলে থাকেও না ৫ মিনিটের দূরত্বে যাদের বাসা, কারা কারা এটাতে ছিল সেটাও আমি জানি। ক্যাম্পাস এবং হল তার নিজস্ব নিয়ম এবং সিডিউল অনুযায়ী চলবে। একাডেমিক ক্যালেণ্ডার দিয়ে দেওয়া হয়েছে বছরের শুরুতেই। হল বন্ধের ব্যাপারটা পূর্ব নির্ধারিত, উপাচার্য চাইলেও নিয়ম বহির্ভূত হয়ে তার বাইরে কিছু করতে পারবে না। শিক্ষার্থীদের এ রকম অযৌক্তিক দাবি মানার কোনো সুযোগ নেই।”

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.