শাকিল বাবু, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ হওয়ার পেছনে যাদের অবদান রয়েছে তাদের মধ্যে আচার্য শ্রীদীনেশচন্দ্র সেন অন্যতম। বাঙালিদের দেশের প্রতি ভালোবাসা তৈরি এবং দেশের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টিতে মৈমনসিংহ-গীতিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থটির প্রকাশের শতবর্ষ উদ্যাপন করতে পেরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় গর্বিত।’
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) প্রশাসনিক ভবনের ভার্চুয়াল কনফারেন্স কক্ষে শ্রী দীনেশচন্দ্র সেন সংকলিত মৈমনসিংহ-গীতিকার শতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শাহাদাৎ বরণকারীদের এবং ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধে মহান শহীদদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “এখন অনেকে বিদেশে যেতে চায়। যারা বিদেশে যেতে চায় তারা এদেশের চেয়ে বিদেশকে অনেক উন্নত ও সবদিক থেকে ভালো ভেবে যায়। কিন্তু বিদেশে গিয়ে তারা বিদেশি সংস্কৃতিকে ধারণ করতে পারে না। তারা তৈরি করে আলাদা একটি সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী।”
ড. সৌমিত্র শেখর আরও বলেন, “আমাদের দেশে সবকিছু ছিল। আর ছিল বলেই ব্রিটিশ উপনিবেশ গড়ে তুলেছিল। এদেশের মাটি খুঁড়লেই ওয়ারী বটেশ্বর, পাহাড়পুর, নালন্দা পাওয়া যায় কিন্তু বিদেশের অনেক দেশেই মাটি খুঁড়লে কিছুই পাওয়া যাবে না। ইংরেজদের সাম্রাজ্য একদিনে ধ্বংস হয় নি। মৈমনসিংহ-গীতিকা ইংরেজদের সাম্রাজ্য ধ্বংস করতে সাহায্য করেছে।”
এদেশের তরুণ সমাজের জন্য মৈমনসিংহ-গীতিকা একটি আলোর দ্যুতি বলে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, “মৈমনসিংহ-গীতিকা পড়তে হবে এবং মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে একটি সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। আমাদের অতীত অত্যন্ত উজ্জ¦ল ছিল সেই উজ্জ্বলতাকে ফিরিয়ে আনাই হবে মৈমনসিংহ-গীতিকার শতবর্ষ উদ্যাপনের মূল প্রেরণা।”
মৈমনসিংহ গীতিকা শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আচার্য দীনেশন্দ্র সেন রিসার্স সেন্টারের পরিচালক ও আচার্য শ্রী দীনেশন্দ্র সেনের প্রপৌত্রী অধ্যাপক দেবকন্যা সেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান। আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন মৈমনসিংহ গীতিকা শতবর্ষ সংখ্যা ‘জলদ’ এর সম্পাদক স্বপন ধর, স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ন কবীর, অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রায়হানা আক্তার।
আলোচনা সভার শুরুতে অনুষ্ঠানের লোগো উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর । পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর সম্পাদিত মৈমনসিংহ-গীতিকা শতবর্ষ-প্রকাশনা গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। সঙ্গীত বিভাগ ও থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসময় একটি পালা উপস্থাপন করে।